জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকল্পে বদলে যাচ্ছে জামালপুরের চিত্র

জামালপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৪, ০২:৪১ পিএম
জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকল্পে বদলে যাচ্ছে জামালপুরের চিত্র

অবহেলিত জামালপুর জেলায় জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২টি প্রকল্পে ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দে কাজ দৃশ্যমান হওয়ায় অনেকটাই বদলে গিয়েছে অবহেলিত জামালপুরের চিত্র।

অবহেলিত এ জেলার মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে জেলার উন্নয়নে অনেক প্রকল্পই হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ।

তিনি ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর জামালপুর জেলায় যোগদান করেন। এরপর থেকেই এ জেলায় উন্নয়নের কাজগুলো দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে বলে অনেকেই জানান।

জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে চলমান অর্থবছর পর্যন্ত সমগ্রদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পে জামালপুর জেলায় সাবমারসিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ ১৫৬০টি ও অগভীর নলকূপ ৯৬২টি এবং কমিউনিটি বেইজড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম ৩২৯টি ৮৩ কোটি ৪৪ লক্ষ ৭৮ হাজার, মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন, গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের পানি সরবরাহ প্রকল্পের কয়েকটি উপজেলায় ৬৩৯টি অগভীর নলকূপে ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ ২৪ হাজার জিপিএস উন্নয়ন প্রকল্পের ১০৭ টি ওয়াশ ব্লক নির্মাণে ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার ও ১৬১ টি পানির উৎস স্থাপনে ২ কোটি ৯৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, এনএনসিপিএস উন্নয়ন প্রকল্পের ৯২টি ওয়াশ ব্লক নির্মাণ ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৫৪ হাজার ও ১৬১টি পানির উৎস স্থাপন এ ২ কোটি ৯৭ লক্ষ ৯৫ হাজার, পিইডিপি উন্নয়ন প্রকল্পের ৪৮৪টি ওয়াশ ব্লকে ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ও ৮০০টি পানির উৎস স্থাপনে ১৫ কোটি ৬৮ লক্ষ, রাজস্ব বাজেটের আওতায় পাম্পযুক্ত অগভীর নলকূপে ৪৭ হাজার, পানির গুণগতমান পরীক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের ১টি ল্যাবরেটরি ভবন নির্মাণ কাজে ৫৩ লাখ ৭৮ হাজার, মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি শীর্ষক প্রকল্পের ১৬টি হ্যান্ড ওয়াশিং স্টেশন ও ৩৬টি স্যানিটেশন হাজিন ফেসিলিটিস এবং ২ টি সাবমাসে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার, ৯৬টি কমিউনিটি বেইজ ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৫৯ হাজার, ৩১টি মূল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমে ৫ কোটি ৫১ লাখ, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলায় ৪টি লার্জ পাইপম ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমে ২৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়।

এ ছাড়াও ৩২টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্পে ২টি উৎপাদক নলকূপ এটি এক্সপ্লোরেটরী ড্রিলিং পরীক্ষামূলক নলকূপ, ২টি পাম্প হাউজ ও ২ টি সাবমারসিবল পাম্প খননে ৮৫ লাখ, ৩২ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপন কাজে ও ৭৭ লাখ ৯২ হাজার, ১.৫ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেইন নির্মাণে ১ কোটি ৪ লাখ ৪৮ হাজার, ১টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন স্থাপন কাজে ৫ কোটি ৯১ লাখ ১৪ হাজার, ১টি ফিক্যাল স্নাজ এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নির্মাণ কাজে ৭ কোটি চার লাখ ৮৫ হাজার, ৪টি পাবলিক টয়লেট ও ১২টি কমিউনিটি টয়লেট এবং ২৫টি কমিউনিটি বিন স্থাপনে ৫৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন কাজ করা হয়।

এদিকে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পে ৪টি পরীক্ষামূলক নলকূপ স্থাপনে ৩ লাখ ৮ হাজার, ২টি উৎপাদক নলকূপ ও ৪টি পরীক্ষামূলক নলকূপ এবং ইলেক্ট্রোমেকানিক্যালসহ পাম্প হাউজ নির্মাণে ১ কোটি ৩৪ লাখ, ৩০০০ ঘনমিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ভূ-গর্ভস্থ জলাধার নির্মাণে ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫ হাজার, ৮টি পরীক্ষামূলক নলকূপ, ৪টি উৎপাদক নলকূপ, ৪টি পাম্প হাউজ, ৪টি বাউন্ডারী ওয়াল, ৪টি সাবমারসিবল পাম্পসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি কাজে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৪৮ হাজার, ২.৪ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন স্থাপনে ১ কোটি ৩২ লাখ ৫ হাজার, ৬.২ কিলোমিটর সারফেস ড্রেন নির্মাণ কাজে ১০ কোটি ৯০ লাখ ১৮ হাজার, ১টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ কাজে ২১ কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার, ৪০০ মিটার সারফেয ড্রেন ওয়ালকওয়ে নির্মাণে ১ কোটি ১১ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে।

অন্যদিকে ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে ইসলামপুরে ড্রেন ও নলকূপ স্থাপনে ৯ কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার, ৩টি পরীক্ষামূলক নলকূপ, উৎপাদক নলকূপ এবং ৩টি পাম্প হাউজ নির্মাণে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭ হাজার, ইঞ্জিনিয়ার অফিসে ২১ লাখ ৪১ হাজার, ৩টি পাবলিক টয়লেট, ১টি ফিক্যাল স্ল্যাজ ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট ২ কোটি ২৭ লাখ ২২ হাজার, ৯৮২টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ৬ কোটি ৯০ লাখ ৩৪ হাজার, ইসলামপুর পৌরসভা প্ল্যান্টে ২ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকার কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়াও বাংলাদেশের ১০ টি অগ্রাধিকার ভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন প্রকল্পে ৬টি পানির উৎস ও ১৫০টি হাউজ হোল্ড কানেকশন এবং ২৪টি স্ট্রিট হাইড্রেন্ট এ ২৩ লাখ ৭৯ হাজার, ৫টি কমিউনিটি ল্যাট্রিনের ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে।

জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এডমিন মো. জাহাঙ্গীর কবীর জানান, সুলতান স্যারের যোগদানের পর ১২টি ৩৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকটি প্যাকেজের কাজ ৫৭ শতাংশ হয়ে আছে যেগুলো সম্পূর্ণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়নে জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ স্যারের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় জামালপুরে সকল উন্নয়নমূলক কাজ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা জামালপুরবাসী সুলতান মাহমুদ স্যারকে জামালপুর জেলার আরও উন্নয়ন কার্যবলী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উনাকে প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে জামালপুর জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ জানান, কাজগুলো এখনো শেষ হয়নি, সেগুলোর এখনো বিল দেওয়া হয়নি। কাজ শেষ হওয়ার পর বিল প্রদান করা হবে। সামনে আরও কিছু প্রকল্পের কাজ আসবে। কোন প্রকার অনিয়মকে এখানে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

ইএইচ