চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগরে অন্তঃসত্ত্বা নারীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরকীয়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। স্বামীর পরকীয়ার ঘটনায় তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে ঘরের ভেতর মারধর করতে থাকে ক্ষুব্ধ স্বামী রবিউল।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে পরিবারের সামনেই রবিউল তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পলি খাতুনকে মারপিট করে। তবে রবিউলের পরিবার বলছে মারপিট ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পলি বিষের বোতল নিয়ে মুখে ঢেলে দেয়। বিষের প্রসঙ্গ আমলে নিয়ে হত্যা দাবি করে পলির পরিবারের সদস্যরা হইচই শুরু করলে লাশ বাড়িতে ফেলে রেখেই রবিউলের পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে।
নিহত পলি খাতুন আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের গিয়াসউদ্দিনের ছেলে ট্রাক চালক রবিউল ইসলাম এর স্ত্রী এবং হারদী ইউনিয়নের গোপালদিয়াড় গ্রামের ফরিদউদ্দিনের মেয়ে। গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিউল ও পলি দম্পত্তির এক মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে। রবিউল সম্প্রতি এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে মা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। সে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে ভিডিও কলে কথা বলতো। এমনকি পলির সামনেও কথা বলতো। এ নিয়ে রবিউলের সাথে পলির প্রতিনিয়তই ঝগড়াঝাঁটি চলতে থাকে। গতকাল বিকেলের দিকেও তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে রবিউল পলিকে ঘরের ভেতর মারপিট করতে থাকে। ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পলি কান্নাকাটি করলে প্রতিবেশীরাও এগিয়ে যায়। তখনই রবিউলের পিতা বলতে থাকেন পলি বিষ খেয়েছে। তাকে পল্লী চিকিৎসক শহিদুলের কাছেও নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তার আগেই পলির মৃত্যু হয় বলে জানান পল্লী চিকিৎসক শহিদুল।সংবাদ পেয়ে গোপালদিয়াড় গ্রাম থেকে ছুটে আসেন পলির বাপ ভাইয়েরা। তারা হত্যার দাবি তুলে থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই রবিউল ও তার বাপ মা ভাইসহ পরিবারের সবাই ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
কালিদাসপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, মারা যাওয়ার পর রবিউলের পিতার রিং পেয়ে তিনি ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। রবিউলের পিতা মারধরের কথা স্বীকার করে বিষ খাওয়ার কথাও বলেছেন। তবে তিনি বিষের কোনো গন্ধ পাননি বলে জানান।
রবিউল ও তার পরিবারের লোকজন কখন পালিয়ে যায় জানতে চাইলে তিনি জানান, মেরে ফেলার ঘটনাটি জোরেশোরে সামনে এলে তারা সবাই পালিয়ে যায়।
পলির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই থানায় নিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ঘটনার পর থেকেই পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত করছে।
বিআরইউ