মহাসড়কে বেপরোয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, বাড়ছে দুর্ঘটনা

মো. শরিফ শেখ (সাভার) প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
মহাসড়কে বেপরোয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, বাড়ছে দুর্ঘটনা

সাভারের মহাসড়কে বেড়েই চলছে ব্যাটারি চালিত রিকশা থ্রি হুইলার বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। ঢাকা আরিচা ও নবীনগর চন্দ্রা এবং আব্দুল্লাহ পুর বাইপাইল মহাসড়কে বেপরোয়া ভাবে চলছে ব্যাটারি চালিত রিকশা, থ্রি-হুইলার।

এসব ব্যাটারি চালিত রিকশা, থ্রি-হুইলার সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দূরপাল্লার যানবাহনসহ সব ধরনের গণপরিবহনের যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে সিএনজি ট্যাক্সি, ব্যাটারি চালিত রিকশা, লেগুনা, বিভিন্ন অবৈধ গাড়ি। ধীরগতির এসব যানবাহনের চালকরা মহাসড়কে প্রায় বেপরোয়া হয়ে গাড়ি চালানোর কারণে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে যেমন বেশি সময় লাগছে, তেমনি ঘটছে দুর্ঘটনাও। তেমনি ঘটনা ঘটেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ব্যাটারিচালিত রিকশার সঙ্গে ধাক্কা লেগে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম আফসানা রাচি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় জাবি শিক্ষার্থী আফসানা রাচির মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাটারিচালিত রিকশা থ্রি হুইলার বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন । ঢাকা–আরিচা ও নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কে আব্দুল্লাহ পুর বাইপাইল মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশা, থ্রি-হুইলার ইজিবাইক ও সিএনজির কারণে গত এক সপ্তাহে ১০টির বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ব্যাটারি চালিত রিকশা, থ্রি-হুইলার নিষিদ্ধ হলেও ঢাকা– আরিচা নবীনগর ও চন্দ্রা আব্দুল্লাহ পুর বাইপাইল মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন।

শহরের অলিগলি থেকে হঠাৎ বের হয়ে মহাসড়কে উঠে যাচ্ছে এইসব ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা, থ্রি-হুইলার চলে বেপরোয়া গতিতে। এতে হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত গতির দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে এসব অবৈধ যানবাহন। প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়েই চলছে এসব ব্যাটারি চালিত রিকশা ও সিএনজি চলতে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে পুলিশ বলছে নামসর্বস্ব কিছু অসাধু দালাল সাংবাদিকদের নামে চলছে এসকল রিকশা, সিএনজি।

ঢাকা আরিচা, ও নবীনগর চন্দ্রা এবং আব্দুল্লাহ বাইপাইল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রায় প্রতিদিনই সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় তাজা প্রাণ ঝরছে। দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ত্রি–চক্রযানের চলাচল নিষিদ্ধ করাসহ গতিরোধক এবং একাধিক পয়েন্টে পথচারী পারাপারে ওভারব্রিজ স্থাপন করেও পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো যায়নি। এ বছর পাঁচ আগস্ট থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এ ২০ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রাণ গিয়েছে ১০- ১২ জনের। আহত হয়েছে অর্ধ শতাধিক। সাভার আশুলিয়া ও নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়ক আব্দুল্লাহ বাইপাইল মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজি,ও থ্রি–হুইলার, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা। অথচ দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সরকার এসব যানবাহন মহাসড়কে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ৬ বছর আগে। ফলে প্রতিটি স্টেশনে দীর্ঘ যানজটের পাশাপাশি ঘটছে ছোট–বড় দুর্ঘটনা।

ঢাকা আরিচা সড়কে চলাচলকারী রাবেয়া পরিবহনের চালক আব্দুল মোতালেব বলেন, ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার জন্য গাড়ি চালানোই দায়! হঠাৎ করেই সামনে চলে আসে, গাড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কষ্ট হয়। যার কারণে হরহামেশাই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। কোনও আইনি ব্যবস্থা না থাকায় দিন দিন বাড়ছে এসব গাড়ির পরিমাণ।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ সওগাতুল আলম জানান, মহাসড়কে নিষিদ্ধ থ্রি–হুইলার গাড়ি মোটেও চলতে পারবে না। প্রতিদিন হাইওয়ে পুলিশের অভিযান চলছে, আটক করে মামলাও দেওয়া হচ্ছে। টাকা লেনদেনের ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই।

জানা যায়, দেশের বাইরে থেকে আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের পাশাপাশি দেশি নিম্নমানের যন্ত্রাংশ দিয়ে স্থানীয়ভাবে সংযোজন করে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো তৈরি করা হয়। এতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়। মহাসড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর ২০১৫ সালে নিষিদ্ধ হয় ব্যাটারিচালিত রিকশা। পাশাপাশি মহাসড়কেও অটোরিকশাসহ কম গতির যানবাহন নিষিদ্ধ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

বিআরইউ