যশোরের চৌগাছায় জাল দলিল দেখিয়ে সাংবাদিক পুত্রের জমি জবর দখলের অভিযোগ করেছেন দৈনিক দিনকাল পত্রিকার সাংবাদিক ও প্রেসক্লাব চৌগাছায় প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রয়াত শাহাদৎ হোসেনের কন্যা শারমিন সুলতানা রত্না ।
২৫ (নভেম্বর) সোমবার বিকেলে প্রেসক্লাব চৌগাছায় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত
বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন তিনি।
সাংবাদিক কন্যা শারমিন সুলতানা রত্না লিখিত অভিযোগে বলেন, চৌগাছা উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের ৪৩ নং আন্দারকোটা মৌজায় ৮৪১ নং খতিয়ানে ৪০৩,১০১১,১০১২, ও ১০৫৬ মোট চারটি দাগে তার পৈতৃক ১শ ৮ শতাংশ জমি বিক্রি করার জন্য ঘোষণা দেয়। এতে গ্রামের অনেকেই জমি ক্রয় করার জন্য দরা দাম করতে থাকে। এ সময় শারমিন সুলতানা রত্নার চাচাতো ভাই মোফাজ্জেল হোসেন ও তার ছেলে ইব্রাহিম অন্য কারো কাছে জমি বিক্রি না করার জন্য হুমকি দিতে থাকে।
এক পর্যায় তাদের ভয়ে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে মোফাজ্জেলের কাছে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। সে সময় আমার ভাই আহম্মদ আলী নাবালক হওয়ার কারণে ৪০৩, ১০১১, ১০১২, ও ১০৫৬ চারটি পৃথক দাগে ভাইয়ের ৬৩.৫০ শতাংশ জমি বাদ রেখে আমি ও আমার মায়ের প্রাপ্ত ৪৫.৩ শতাংশ জমি তাদের নিকট বিক্রি করি। বাকি ৬৩ শতাংশ জমি বর্গা দিই। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে আমার ভাইয়ের জমি বিক্রি করতে গেলে মোফাজ্জেল হোসেন ও তার ছেলেদের সাথে বিবাদ বাধে। মোফাজ্জেল ও তার ছেলে ইব্রাহিম জানায় এই জমি তারা কিনে নিয়েছে। এ সময় তারা একটি ভ‚য়া দলিল যার নং ১৫৮৯ ও তারিখ ৩১/০৩/২০১৫ ইং দাতা মাহামুদুর রহমান দেখায়। যেখানে তার ভাইয়ের নাম ও জন্ম তারিখ ভুল লেখা হয়েছ। তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের নাম আহম্মদ আলী এবং জন্ম তারিখ ২০ জুন ২০০১। একই নাম ৫ম
শ্রেণি থেকে সকল শিক্ষা সনদে লেখা হয়েছে। কিন্তু মোফাজ্জেল যে দলিল দেখাচ্ছে সেখানে আমার ভাইয়ের দাড়িযুক্ত একটি নকল ছবি ও নাম মাহামুদুর রহমান এবং জন্ম তারিখ ১ জুলাই ১৯৯৪ লেখা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ভুয়া।
তিনি আরো জানান যে তারিখে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে তখন আমার ভাইয়ের বয়স ১৩ বছর ৯ মাস ১১ দিন। বাংলাদেশ জমি রেজিস্ট্রি আইনে আমার ভাই তখন একজন নাবালক। নাবালকের জমি রেজিস্ট্রি করতে হলে একজন অভিভাবকের শনাক্তকারী হিসেবে স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। দলিলে কোনো শনাক্তকারির স্বাক্ষর করা হয়নি। ঘটনাটি জানতে পেরে ভ‚য়া দলিলের মাধ্যমে ক্রয়কৃত জমি নাম জারি না করার জন্য আমরা চৌগাছা উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অভিযোগ করি। একই সাথে আমার ভাইয়ের জন্ম সদন যাচাই করার জন্য বলি। এ সময় চৌগাছা পৌরসভাকে
জন্ম সনদ দুটি যাচাই করার জন্য নির্দেশ দেন তৎকালীন এসিল্যান্ড গুনজন বিশ্বাস। এরই মধ্যে ৫ আগস্টে দেশের পট পরিবর্তন হয়। এই সুযোগে মোফাজ্জেলের ছেলে ইব্রাহিম পৌরসভা, ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে দখলকৃত জমি নাম জারি করে নেয়। এর পরেই আমার ভাইয়ের ৬৩ শতাংশ জমিই দখল করে নেয়। জমিতে গেলে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
তিনি আরো জানান, স¤পত্তি উদ্ধার ও জাল দলিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যশোর চিফ জুডিশিয়াল আদালতে মামলা করেছেন। মামলাটি চৌগাছায় থানায় তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, তাদের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না আর যদিও কেউ করে তাহলে তাদের উপর হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।
এবিষয়ে মোফাজ্জেলের ছেলে ইব্রাহিমের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি নিজে একজন সাংবাদিক দাবি করে বলেন, নিউজটি করার প্রয়োজন নেই। আপনার লেখেন আমিও বিভিন্ন চ্যানেলে এই খবর প্রচার করবো। প্রেসক্লাব চৌগাছায় সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে চৌগাছা থানার নবাগত ওসি পায়েল হোসেন বলেন, আমি মাত্র কয়েকদিন হয়েছে এই থানায় যোগদান করেছি। বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখব বলেন তিনি।
আরএস