রশিদ ছাড়া ট্রেনের ভাড়া আদায়, প্রশ্ন করায় সাংবাদিক লাঞ্ছিত

লালমনিরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৪, ০৮:৫৭ পিএম
রশিদ ছাড়া ট্রেনের ভাড়া আদায়, প্রশ্ন করায় সাংবাদিক লাঞ্ছিত

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিন সাংবাদিককে লাঞ্চিত করার অভিয়োগ উঠেছে।

বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হচ্ছে এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গেলে রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।

রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ওই তিন সাংবাদিক হলেন ঢাকাপোস্টের নিয়াজ আহমেদ সিপন, আমার সংবাদের মহসীন ইসলাম শাওন ও দূরবীন নিউজের জুয়াবের আহমেদ খান।

সাংবাদিকদের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চলন্ত একটি আন্তনগর ট্রেনে ইউনিফর্ম পরিহিত দুই পরিচর্যক (অ্যাটেনডেন্ট) বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে দরদাম করে টাকা নিচ্ছেন।

গত ১৯ নভেম্বর ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এ ঘটনার ভিডিও একজন যাত্রী ধারণ করেন। জানা গেছে, ওই দুই পরিচর্যকের একজন সোহেল রানা ও অপরজন মো. রাহাত।

সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, রোববার বিকেলে ‘বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া’ প্রসঙ্গে পরিচর্যকদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবুর  কক্ষে যান সাংবাদিকরা। নিজেদের পরিচয় দিয়ে ওই ঘটনা প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে সাংবাদিকদের উপর ক্ষেপে যান ওই কর্মকর্তা। তেঁড়ে উঠে ওই কর্মকর্তা নিজেকে দেশের প্রথম ‘শিশু সাংবাদিক’ দাবি করে নানা ধরণের দম্ভোক্তি দেখাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ‘গেটআউট’ বলে নিজের কক্ষ থেকে বের করে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে রাতে ওই কর্মকর্তাকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

যোগাযোগ করা হলে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘যাত্রীসেবা সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ধরণের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা ববে।’ সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করার বিষয়েও তিনি ব্যবস্থ্য গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রতিনিয়ত বিনা টিকিটে রেল ভ্রমনকারী যাত্রীদের কাছে পরিচর্যকরা টাকা আদায় করেন। আর আদায়কৃত অর্থের একটি অংশ ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগনের প্রকৌশলী তাসরুজ্জামান বাবুর পকেটেও আসে। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়েতে ‘উগ্র কর্মকর্তা’ হিসাবে পরিচিত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠার পর গত ১ অক্টোবর তাকে ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগনের প্রকৌশলীর পদ থেকে বিভাগীয় পার্সোনাল অফিসার হিসাবে বদলি করা হয়। কিন্তু সেই পদে যোগদান না করে নানা কৌশল খাটিয়ে আগের পদেই থেকে যান।

এদিকে লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর জন্য সম্প্রতি প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে ওই কর্মকর্তার নেতৃত্বে নতুন করে ‘টার্নটেবিল’ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি উদ্বোধনের আগেই ভার বহনে অক্ষম হয়ে পড়ে।

ইএইচ