কক্সবাজারে বন্দির স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিলেন কারারক্ষী

কক্সবাজার প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৮:০২ পিএম
কক্সবাজারে বন্দির স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিলেন কারারক্ষী

কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি থাকা এক ব্যক্তির সাথে দেখা করতে আসতেন স্ত্রী। যাওয়া আসার মধ্যে পরিচয় হয় কারাগারে কর্মরত কারারক্ষী রিয়াদের সাথে।

পরিচয় গড়ায় পরকীয়ায়। এরপর কারান্তরীণ স্বামী ও ঘরে অবুঝ দুই সন্তান রেখে কারারক্ষীর সাথে পালিয়ে যান স্ত্রী। পরকীয়ায় জড়িয়ে পালানোর সময় নিয়ে গেছেন স্বামীর ঘরের সহায় সম্পদ।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. মাসুদ করিম (৫০) তার স্ত্রী রুপা বেগম (৩৫) এবং স্ত্রীর কথিত প্রেমিক মো. রিয়াদ হোসেন (২৬) কারারক্ষী নং (২২৮১৬) এর বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে তিনি দাম্পত্য জীবন ধ্বংস, আর্থিক ক্ষতি এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হওয়ার বিষয় তুলে ধরেছেন।

ভুক্তভোগী মাসুদ করিম জানান, তিনি একটি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন। সেই সময় তিনি অসুস্থ হলে কারা হাসপাতালে থাকার জন্য ১২ হাজার টাকা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তার স্ত্রী কারাগারে যান। এরপর থেকে রুপা বেগম কারাগারে গিয়ে তাকে নগদ অর্থ দেওয়ার অজুহাতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে জেল সুপারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) ও কারারক্ষী মো. রিয়াদের সঙ্গে তার স্ত্রীর পরিচয় এবং সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেই পরিচয় একপর্যায়ে পরকীয়ায় রূপ নেয়।

মাসুদ করিম আরও অভিযোগ করেন, গত ৩০ আগস্ট রিয়াদ, রুপা বেগম এবং তাদের দুই সন্তান কক্সবাজারের একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করেন। তার বড় ছেলে পুরো বিষয়টি প্রত্যক্ষ করে। পরে তিনি জানতে পারেন, তার ঘর থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা, আনুমানিক দুই লাখ টাকার আসবাবপত্র এবং এক লাখ বিশ হাজার টাকার স্বর্ণালংকারসহ সব মালামাল লুট করে রুপা বেগম ও রিয়াদ পালিয়ে গেছেন।

মাসুদ করিম আরও জানান, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি স্ত্রীর সন্ধানে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, রিয়াদের প্ররোচনায় রুপা বেগম তার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা একে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অনেকেই মাসুদ করিমের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। আবার কেউ কেউ ঘটনাটিকে অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেলার আবু মুছা বলেন, রিয়াদ নামের একজন কারারক্ষী কর্মরত আছেন। এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। আমাদের কাছে ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলসুপার মো. জাবেদ মেহেদী বলেন, ভুক্তভোগীর নাম-ঠিকানা পেলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইএইচ