জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটেছে। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে পারলে চলমান অস্থিরতা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে প্রত্যাশা দেশের সচেতন নাগরিকদের।
বাগেরহাটের চিতলমারী চর কচুড়িয়া উত্তর পাড়া মৃধা বাড়ি জামে মাসজিদে গত শুক্রবার জুমার খুতবার পূর্বে বয়ান করছিলেন মাওলানা শেহাব উদ্দীন মৃধা কুরআনের শাসন কায়েম ও সুবিধা এবং কুরআন ওয়ালাদের সমর্থন শীর্ষক আলোচনা করার এক পর্যায়ে একই গ্রামের আওয়ামী লীগের মুজিবর মৃধা এর তীব্র বিরোধিতা করে।
এ ঘটনায় অস্থিরতা বিরাজ করছে ঐ এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মুজিব মৃধার ছেলে মেয়েরা সরকারি চাকরি করে। তার প্রভাব খাটিয়ে মুজিবর মৃধা স্বৈরাচারের শাসনামলে বিভিন্ন ধরনের জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষের উপর। সমাজের কোনো মানুষকে মানুষ মনে করেনি। সাধারণ মানুষের উপর চড়াও হয়েছে সবসময়। মুজিবের সামনে কোনো আলেম কথা বলতে আসলে অপমানজনক কথা বলে থাকে সবসময়। প্রতি শুক্রবার ইমামের বয়ানে বাধা দেন এ মুজিবর মৃধা। তার টাকা এবং ক্ষমতার বলে কেউ এতদিন মুখ খুলতে সাহস পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
চর কচুড়িয়া গ্রামের মৃধা পড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিহাব জানান, শুক্রবার খুতবা দেওয়ার পূর্বে কুরআনের শাসন কায়েম ও সুবিধা এবং কুরআন ওয়ালাদের সমর্থন শীর্ষক আলোচনা করছিলাম ঠিক তখন মুজিবর মৃধা তার বিরোধিতা করে এবং অপমান জনক কথা বলে। সে সবসময় আমার সাথে অপমান জনক ভাষায় কথা বলে।
চর কচুড়িয়ার স্থানীয় ঐ এলাকার মসজিদের কয়েকজন নিয়মিত মুসল্লি গণমাধ্যমকে জানান, মুজিবর মৃধা একজন আওয়ামী দোসর। শুক্রবার কুরআন ও হাদিসের আলোচনার মধ্যে বাধা সৃষ্টি করায় চর কচুড়িয়া গ্রামবাসীসহ পুরো চিতলমারী উপজেলার ইসলাম প্রিয় তাওহিদি জনতা এর তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছে।
চর কচুড়িয়া গ্রামের উত্তেজনার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চিতলমারী থানার অন্যতম সদস্য সিয়াম রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গত ৫ আগস্ট এক দফা দাবির মাধ্যমে ১৫ বছরের স্বৈরাচার সরকারকে নামাতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু বিভিন্ন সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। বাংলার মাটিতে আমরা কোন ফ্যাসিবাদ স্বৈরাচারকে আশ্রয় দেব না। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে চর কচুড়িয়া গ্রামে আওয়ামী দোসর মুজিবর মৃধা স্বৈরাচারের শাসনামলে বিভিন্ন ধরনের জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষের উপর।
চিতলমারী ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা আজিজ গণমাধ্যমকে জানান, চর কচুড়িয়া গ্রামের মৃধা পড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিহাবকে খুতবা দেওয়ার পূর্বে কুরআনের শাসন কায়েম ও সুবিধা এবং কুরআন ওয়ালাদের সমর্থন শীর্ষক আলোচনা করার এক পর্যায়ে একই গ্রামের আওয়ামী লীগের দোসর মুজিবর মৃধা তীব্র বিরোধিতা করে এবং অপমান জনক কথা বলে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
চর কচুড়িয়া গ্রামে মুসল্লিদের মাঝে উত্তেজনার বিষয়ে চিতলমারী থানার ওসি এস. এম শাহাদাত হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি, আমাদের কাছ কোন অভিযোগ না করায় আমরা কোন আইন আনুগ ব্যবস্থা নিতে পারছি না।
ইএইচ