আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস

সন্দ্বীপে টেকসই পুনর্বাসন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

সন্দ্বীপ প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৫:৩৬ পিএম
সন্দ্বীপে টেকসই পুনর্বাসন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে সোসাইটি ফর ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভস (এসডিআই) ও দাতা সংস্থা কোস্ট ফাউন্ডেশনের সিসিআর প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে সন্দ্বীপ উপজেলায় সমন্বিত স্থানীয় জলবায়ু বাস্তুচ্যুত ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শক্তিশালী করন বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ এর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন- সন্দ্বীপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মারুফ হাসান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- সন্দ্বীপ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আলী আজম।এসডিআই কেন্দ্রীয় অফিসের সহকারী পরিচালক (উন্নয়ন) মো: আশরাফ হোসেন এর সঞ্চালনায় এ সেমিনারের শুরুতে উপস্থিতিদের পরিচিতি ও পরে সেমিনারের প্রধান আলোচক ও প্রবন্ধ উপস্থাপক এবং কোস্ট ফাউন্ডেশনের হেড অব দ্যা ক্লাইমেট চেইঞ্জ এর এম.এ হাসান সেমিনারের মূখ্য উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম নিয়ে ভিডিও প্রেজেন্টশনের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

সেমিনারের প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর প্রস্তাবনামুলক সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন- সন্দ্বীপ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন, দুর্যোগ প্রশমন ও প্রস্তুতি অধিদপ্তরের মো আরিফুর রহমান,সন্দ্বীপ প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি ইলিয়াস কামাল বাবু, এসডিআই সন্দ্বীপের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. কামাল হোসেন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সন্দ্বীপ শাখার সভাপতি ইলিয়াছ সুমন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ সন্দ্বীপ অঞ্চল প্রধান মো. শামসুদ্দিন, সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের সভাপতি হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি ,এসডিআই সমৃদ্ধি প্রকল্পেরকর্মসুচী কর্মকর্তা মো. সিরাজুদ্দৌলা, কারিতাস সন্দ্বীপ অঞ্চলের ব্যবস্হাপক মো. গিয়াসউদ্দিন শরীফ, ব্রাক সন্দ্বীপের প্রধান নুরুল আলম, আজিমপুরের বাস্তুচ্যুত  মাজাহারুল ইসলাম ফরিদ  মাস্টার মোসাদ্দেকুল মাওলা, হরিশপুরের সচীরানী জলদাশ, মনোহর জলদাশ প্রমুখ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন- বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ। বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের তুষারধ্বসে সাগর-মহাসাগরের পানির স্তর যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে করে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিরাট একটি নীচু অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে।এতে করে বিশাল একটি জনগোষ্ঠী বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বে, তাদের আশ্রয়ানের প্রয়োজন পড়বে। এ সমূহ ঝুঁকির মধ্যে আমাদের চারিদিকে সাগরবেষ্টিত সন্দ্বীপও অন্যতম।

ক্লাইমেট চেইঞ্জ এর কারণে ঘন-ঘন ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও নদী ভাঙন কবলিত হয়ে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ আবাদি ভূমি ও জনবসতি নদী ও সাগরবক্ষে বিলীন হয়ে গেছে। এতে একদিকে আবাদি জমি ও ফসলী জমি যেমন কমছে,অন্যদিকে মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়ে পড়ছে। তাই এই সকল লোকদের জন্য বেশি বেশি সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তোলাসহ তাদের স্বাস্থ্যসম্মত জীবন ও বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম জীবিকার ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য বক্তাগণ বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে বাংলাদেশের জন্য ন্যায্য পাওনা থেকে চারিদিকে সাগরবেষ্টিত এবং দেশের মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপ এর বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হলে এখানে ইতঃপূর্বে নদীর করাল গ্রাসে যারা সিকস্তি ও উদ্বাস্তু হয়ে বিভিন্ন স্থানে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে তাদের জন্য উন্নত আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তোলা যাবে,তাদের শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রও নিশ্চিত করতে হবে। 

তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ কে ও সন্দ্বীপের মানুষের জানমাল জলোচ্ছ্বাস থেকে নিরাপদ রাখতে হলে অচিরেই বেড়িবাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে হবে এবং টেকসই করতে হবে। 

এ কাজে সরকারকেই জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগী হতে হবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। পুরো সেমিনারটি সমন্বয় করেন, সিসিআর প্রজেক্ট  এসডিআই এর কমিউনিটি মোবিলাইজার বাদল রায় স্বাধীন।

বিআরইউ