আশানুরূপ ফলন না পাওয়া প্রতিবছরের চেয়ে তিনগুণ খরচাসহ প্রকৃতির প্রতিকূল পরিবেশের কারণে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আমনের ফলন বিপর্যয় হয়েছে।
আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ হাজার ৮৩৬ হেক্টর হলেও অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চাষাবাদ হয়েছে হেক্টর জমিতে।
হেক্টর প্রতি ৫ মে. টন লক্ষ্য মাত্রা থাকলে ফলন হয়েছে ৪ মে. টন।
সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের কৃষক মোজাম্মেল হোসেন। পরিবারের জন্য বছরের খোরাকি রেখে খরচের বড় জোগান আসে তার আমন ধান বিক্রি করে।
এ বছর কোন ফলন না পেয়ে উল্টো ঋণের বোঝা তার ঘাড়ে। শুধু মোজাম্মেল নয়, তার মতো শত-শত কৃষকের বেহাল অবস্থা। একদিকে ধান না পাওয়া অন্যদিকে বীজতলা, বীজ নষ্ট, শ্রমিক মজুরি দিয়ে ধান রোপণের পর জলাবদ্ধতায় ধান পঁচে যাওয়াসহ মহা লোকসানে ঋণের জালে হিমশিম খাচ্ছে সুবর্ণচরের কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের কেরামতপুর গ্রামের বেলাল উদ্দিনের সাথে।
তিনি জানান, যথাসময়ে আমরা আমনের বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন করি। সপ্তাহখানেক পরে টানা দু’সপ্তাহের বেশি বৃষ্টি এবং গাংচিল খাল ও করিম খাল দখলের পর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। পরে আবার আমন চারা ক্রয় করে ৫ একর জমিতে চারা বপন করি। তার কদিন পরেই ভারতীয় পানির চাপে ফের আমন চারাগুলো পঁচে গেছে। পরে সরকারিভাবে কিছু বীজ পেলে সেগুলো আবার বপন করি। কিন্তু চারাগাছ যথেষ্ট গোঁড়া বৃদ্ধি না করায় আশার তুলনায় তিনের একভাগ ফলন পেয়ে হতাশ হয়েছি। অথচ প্রতিবারের চেয়ে তিনগুণ বেশি খরচা করতে হয়েছে।
এ বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ আমার সংবাদকে জানিয়েছেন, এ বছর একদিকে টানা বৃষ্টি আর অন্যদিকে বন্যার পানিতে জলাবদ্ধতায় সুবর্ণচরের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীজতলা নষ্ট হলে সরকারি ও বেসরকারিভাবে চারা বিতরণের কারণে ৩৯ হাজার হেক্টর আবাদি জমির ৯০ শতাংশ চাষের আওতায় আনা হয়েছে।
ফলন বিপর্যয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শেষ মৌসুমে ধান রোপণের ফলে ফলন আশানুরূপ কম হয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে উপজেলা প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে জানতে চাইলে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকি বলেন, আমি কয়েকদিন হয়েছে সুবর্ণচরে এসেছি, এখানকার সংবাদকর্মীরা আমাকে জলাবদ্ধতাসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশ সম্পর্কে জানিয়েছেন। আমি যথাসম্ভব আইনি ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা করবো।
ইএইচ