পাঁচ বছর যাবত শত শত পাখিকে খাবার দিচ্ছেন কুড়িগ্রামের পাখি প্রেমিক ফজলুল হক।
কুড়িগ্রামের পাখি প্রেমিক ফজলুল হক পেশায় একজন ঠিকাদার। তার বাড়ি শহরের নিমবাগান কবিরাজপাড়া এলাকায়।
জানা গেছে, প্রতিদিন ভোরের আলো যখন ছড়িয়ে পড়ে ঠিক তখনই চারিদিক থেকে শতশত বিভিন্ন জাতের পাখি উড়ে আসে তার বাড়ির আঙ্গিনায়। বারান্দায় ও আশপাশের গাছের ডালে কিচিরমিচির করতে থাকে।
পাখির ডাকেই সকালে ঘুম ভাঙ্গে পাখি প্রেমিক ফজলুল হকের। বুঝতে পারে তার অতিথিরা চলে এসেছে খাবার দিতে হবে।
ফজলুল হক ঘরের দরজার কাছে আসতে দলে দলে পাখি আসে। তখন পাখিগুলোকে মুড়ি, চানাচুর, চাল, ডালসহ বিভিন্ন প্রকার খাবার দেয়।
পাখিগুলো খাবার খেয়ে আপন মনে চলে যায়। তার বাড়িতে বিভিন্ন জাতের পাখি দেখতে এলাকার অনেক মানুষ প্রতিদিনই ভিড় জমায়।
স্থানীয় মোজাক্কের আলী জানায়, আমরা প্রতিদিন দেখি দূর-দূরান্ত থেকে পাখিরা খাবার খেতে ফজলু ভাইয়ের বাসায় আসে। তিনি অনেক যত্ন করে পাখিদের খাবার খাওয়ান।
রাণু বেগম জানান, বছরের পর বছর প্রতিদিন নাম না জানা শত শত পাখি এখানে আসে। প্রথম দিকে এলাকার মানুষ অবাক হয়েছিল এতো পাখি দেখে।
পাখি প্রেমিক ফজলুল হক জানায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে এক সকালে বারান্দায় বসে রুটি খাচ্ছি। ঐ সময় কিছু পাখি বাড়ির আঙিনায় আসে। পাখিদের দেখে ভালোবেসে কিছু রুটি ও চানাচুর আঙ্গিনায় ছিটিয়ে দেই খাবারের জন্য। সে দিন এগুলো খেয়ে চলে গেলেও পরদিন আবারও আসে খাবারের আশায় পাখির দল। এভাবেই প্রতিদিন তাদের খাবার দিতে থাকি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাখির সংখ্যাও বাড়তে থাকে। বর্তমানে শত শত শালিক, ঘুঘু, বুলবুলি, কাঠঠোকরা, কাক, দোয়েলসহ নাম না জানা পাখি সকাল হলেই প্রতিদিন আমার বাড়িতে আসে। খাবার খেয়ে চলে যায়। বাড়ির মানুষরাও তাদের আপন হয়েছে। আমি কোন কারণে বাহিরে গেলে আমার স্ত্রী খাবার দেয়। ওরা আমার দরজার সামনে কিচিরমিচির করে। তাদের জন্য আপেল, চানাচুর, চাল, ডালসহ বিভিন্ন প্রকার খাবার দেওয়া হয়। পাখিগুলো আমার সন্তানের মত।আমার ইচ্ছে আজিবন পাখিদের এভাবে খাওয়াব।
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ আর মামুন জানান, পাখি হচ্ছে প্রকৃতির প্রাণ। নগরায়ণের এই যুগে ক্রমাগত পাখির আবাসস্থল কমে যাচ্ছে সেই প্রেক্ষিতে ফজলু মিয়ার মত কিছু পাখি প্রেমিক মানুষ পাখিকে খাওয়াচ্ছে তার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
ইএইচ