নাব্যতা সংকট, কল-কারখানা, কয়লা, ট্যানারির দূষিত বর্জ্য, অবৈধ দখল, ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলায় প্রতিনিয়ত তুরাগ হারাচ্ছে তার নাব্যতা।আর এ কারণেই প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ রুটে চলাচলরত বাল্কহেডসহ বিভিন্ন মালবাহী নৌযানের চালকরা।
গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকার তুরাগ তীরে বসবাস করা স্থানীয় বাসিন্দা আবেদ আলী বলেন, এই নদীর অবস্থা আগে এমন ছিল না।কিছু মানুষের অবহেলায় আর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের খেয়ালিপনায় এই নদীর আজ এই অবস্থা।
মারুফ নামের একজন বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং বাছ-বিচার না করেই কলকারখানা স্থাপন করা তুরাগ নদী ধ্বংসের অন্যতম কারণ। কারখানার বর্জ্য নদীতে মিশে নদীকে বিষাক্ত করে তুলেছে।
নাব্যতা সংকটে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গাজীপুরের কড্ডার তুরাগ নদীর অবস্থা ভয়াবহ।মাঝেমধ্যেই শোনা যায়,জায়গায় জায়গায় ডুবো চরে বাল্কহেড ও বিভিন্ন মালবাহী নৌযান আটকে আছে দিনের পর দিন।আর এভাবেই নাব্যতা সংকট বাড়তে থাকলেও এ পথে নৌযান ও বাল্কহেড চলাচল এক সময় অসম্ভব হয়ে পরবে।এ ব্যাপারে বারবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোন উপায়ন্তর না পেয়ে দিনের পর দিন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এ পথ ব্যবহার করা নৌযানসমূহ।
এব্যাপারে চরম উদ্বিগ্ন এ পথ ব্যবহার করে তুরাগ নদীর আশুলিয়া-কড্ডা নৌরুটে চলাচল করা নবীন সোয়াত বাল্কহেডের গ্রিজার বায়েজিদ বলেন, শুষ্ক মৌসুম শুরু হতে না হতেই নাব্যতা সংকটে চরম দুশ্চিন্তায় এ পথে বাল্কহেড নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।মাঝেমধ্যে আশুলিয়া ব্রিজ,নর্থ টাউন,তৈয়বপুর,ধনঞ্জয়খালী, জেলেপাড়া, মাইমুন টেক্সটাইল এলাকাগুলোতে ডুবো চরে দিনের পরদিন আটতে থাকতে হয়।এতে আর্থিকভাবে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
সরজমিনে গিয়ে এসব তুরাগ নদীর আশুলিয়া-কড্ডা এলাকা ঘুরে জানা যায়,নবীন সোয়াতের পাশাপাশি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার তুরাগের এসব ডুবো চরে আটকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হামীম-১,আয়েশা-১,নাভাস-৫,আমিরাত-২,ইত্তেহাত-২ সহ বেশ কিছু বাল্কহেড ও মাল এবং যাত্রীবাহী নৌযান সমূহ।
এছাড়াও নাব্যতা সংকটে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আশুলিয়া-কড্ডা ব্রিজ নৌরুটের ইজারাদার মৃধা জুয়েল রানা বলেন,সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে নাব্যতা সংকটে নৌযান ও বাল্কহেড স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে না পারায় লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফেরানোর চেষ্টা করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ কে একাধিক বার জানানোর পরও কাঙ্ক্ষিত সেই ড্রেজিংয়ের কোন বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি না। এমনভাবে চলতে থাকলে ইজারায় বিনিয়োগকৃত অর্থ তুলতেই অনেক বছর লেগে যাবে।তাই এ পথে ড্রেজিং এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন জানাই।
বিআরইউ