গোয়ালন্দে মুড়িকাটা পেঁয়াজে দিশেহারা কৃষকেরা

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
গোয়ালন্দে মুড়িকাটা পেঁয়াজে দিশেহারা কৃষকেরা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে উঠতে শুরু করেছে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ। এবার অতিবৃষ্টিতে ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় ফলন ও দাম কম হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।

বর্তমানে প্রতিমণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫শত টাকা থেকে ১৭শত টাকায়। বিঘায় এবার ফলন হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ মণ।

চাষিদের দাবি, সার-বীজসহ সব কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের খরচ বাড়লেও উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। বৈরী আবহাওয়ায় এবার যেমন ফলন কম হয়েছে, তেমনি বাজারে দামও খুবই কম। এরপর আবার পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। যে কারণে প্রতি বিঘায় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাই কৃষকদের বাঁচাতে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি না করলে দেশি পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়বে।

পেঁয়াজ চাষি মো. সামছু মোল্লা  বলেন, অবস্থা এবার ভালো না। বিঘায় এক লাখ  টাকা খরচ করে উঠতেছে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ হাজার। সার-ওষুধের দামের কারণে আমরা দিশেহারা। তাছাড়া এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজ মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। ন্যূনতম ৮০ থেকে একশ টাকা দাম হলে কৃষক কিছুটা বাঁচতো।

কৃষক আলমগীর মোল্লা বলেন, এ বছর প্রতিটি ক্ষেতেই ফলন খুব কম হয়েছে। পেঁয়াজ রোপণের পর বৃষ্টি হওয়ায় পেঁয়াজের গুটির ক্ষতি হয়েছে। গত বছর বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মণ ফলন পেলেও এবার ৪০ থেকে ৪৫ মণ হচ্ছে। এবার আট থেকে ১২ হাজার টাকায় পেঁয়াজের গুটি (বীজ) ও সারসহ সব কৃষি উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় একলাখ টাকা। বর্তমান বাজার মূল্য ১২শত টাকা থেকে ১৪ শত টাকা। সে অনুযায়ী ফলনও ভালো হয়নি আবার দামও কম। যার কারণে বিঘায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার লোকসান যাচ্ছে।

কৃষক মো. আবু মুসা শেখ বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এবার আশানুরূপ ফলন হয়নি। ফলে খরচের অর্ধেক টাকা লোকসান হচ্ছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকনুজ্জামান বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। রবি মৌসুমের শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকের আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ পঁচে যায়। যার কারণে ফলন কিছুটা কম হয়েছে। ওই পেঁয়াজ এখনো কৃষক বিক্রি করছেন। যেখানে বিঘায় ৬০ থেকে ৭০ মণ ফলন হওয়ার কথা, সেখানে হয়েছে ৪০থেকে ৪৫মণ। তবে দেশের পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলে কৃষক লাভবান হবে।

ইএইচ