বড়লেখায় একঘরে ঘোষিত পরিবারকে দাওয়াত দেয়ায় ৫ পরিবারের ওপর হামলা

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম
বড়লেখায় একঘরে ঘোষিত পরিবারকে দাওয়াত দেয়ায়  ৫ পরিবারের ওপর হামলা

বড়লেখায় আইনের কোন তোয়াক্কা না করে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে একঘরে করেন  এক ব্যক্তিকে। এই এক ঘরে ঘোষিত ব্যক্তিকে মসজিদের সেক্রেটারির মেয়ের আকিকায় দাওয়াত দেয়াকে কেন্দ্র করে  রাতের আঁধারে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন খানসহ ৫  ব্যক্তির বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।এসব পরিবার গুলো টাকা  সহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করার অভিযোগ করেন।  শনিবার রাত সাড়ে ১০ টায় বিওসি কেছরীগুল গ্রামে সন্ত্রাসী এই ঘটনাটি ঘটেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মাঝে  এখনও চরম উদ্বেগ আতঙ্ক বিরাজ করছে।

অভিযোগ উঠেছে আফজল হোসেন, কামাল আহমদ, কাশেম আহমদ গংদের নেতৃত্বে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। রাতের আঁধারে চালানো হামলায় আহত হন ফরিদা বেগম ও স্বপ্না বেগম। এর আগে আহত হন মসজিদের সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন, আব্দুল জলিল ও প্রতিপক্ষের আপ্তাব উদ্দিন। এদের দুইজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে মামলা ও এলাকায় গিয়ে জানা যায়  ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্ত্রী রুশনা বেগম রোববার ঘটনার সাথে জড়িত   ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। আদালত আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার বিওসি কেছরীগুল গ্রাম পঞ্চায়েত শৃঙ্খলার কারণে সয়ফুল আহমদকে গ্রাম থেকে একঘরে করেন। সয়ফুল আহমদ মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন খানের ভাতিজা হয়। কামাল উদ্দিন একঘরে ঘোষিত সয়ফুল আহমদকে মেয়ের আকিকায় দাওয়াত দেওয়ার জেরে গ্রামের কিছু সংখ্যক ব্যক্তি ক্ষেপে যায়। তারা শুক্রবার বাদ জুমআ’ একঘরে সয়ফুল আহমদকে কেন আকিকায় দাওয়াত দেয়া হলো তার কৈফিয়ত চায় কামাল আহমদ খান এর কাছে। একপর্যায়ে তারা তাকে মারধর শুরু করে। উপস্থিত মুসল্লিরা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন। 

এদিকে, শনিবার দুপুরে গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের দ্বিতীয় ছেলে আব্দুল জলিল ভাগনে কামাল উদ্দিন খানকে দেখতে গেলে প্রতিপক্ষের আপ্তাব উদ্দিন ও তার ছেলেরা ফেরার পথে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে আব্দুল জলিলের বাম হাতে মারাত্মক জখম হয়। আহত জলিলকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এই ঘটনার জেরে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। অপরপক্ষের হামলায় আপ্তাব উদ্দিনও আহত হন।

আপ্তাব উদ্দিন আহত হওয়ায় তার পক্ষের লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আব্দুল জলিল, মসুদ আহমদ, আব্দুল কাইয়ুম, কামাল আহমদ খান, সায়ফুল আহমদ, মকবুল আলী ও জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে হামলা চালায়। ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে দরজা জানালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রনিক্স মিটার খুলে নিয়ে যায় এছাড়া , আলমিরা ভেঙ্গে মালামালও লুট করে নিয়ে যায়।

আহত ফরিদা জানায় প্রায় ৩ মাস পূর্বে আমার বসত ঘর ও দুটি গরু পুড়িয়ে দিয়েছে এব্যাপারে আমি মামলা করি আমার মামলার বিবাদীরা আমার উপর ও আমার ননদের উপর হামলা করে আমার স্বামীর বসত ঘরে হামলা ভাঙচুর করে। এছাড়া আমার মামলার সাক্ষী মকবুল আহমদ খান এর বাড়িটা ভাঙচুর করে যান।

এব্যাপারে বি ও সি কেছরিগুল কেন্দ্রীয় জামে মমসজিদ কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

থানার ওসি মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত একটি পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করছেন। যথাসময়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিবেন । 

আরএস