রাঙামাটির সমতল ও পাহাড়ি ঢালু জমিতে প্রচুর পরিমাণ কমলার চাষাবাদ হচ্ছে। প্রতিটি গ্রামে কমলা চাষে বদলে যাচ্ছে পাহাড়ের কৃষকদের অর্থনীতি।
স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় কমলা চাষে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে উঠেছে পাহাড়ের চাষিরা। স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি কমলা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গাছে গাছে হলুদ রঙের বড় বড় কমলা ঝুলছে। ছোট ছোট ঝিরি ঘেঁষে গড়ে উঠেছে কমলার বাগান। এ যেন প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে আরো অপরূপ সৌন্দর্য।
প্রতিটি বাগানে কমলা গাছের দিকে তাকালে চোখ জুড়িয়ে যায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের আবহাওয়া ও জলবায়ু অনুকূল। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হলুদ রঙের কমলার চাষ।
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ১৭ মাইল এলাকা তৈ চাকমা, যাদুখাছড়া ও নব কার্বারিপাড়ায় গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা মেলে।
আকারে বড়, রসাল আর মিষ্টি স্বাদের কমলার ফলন হচ্ছে পাহাড়ের বেশ কিছু স্থানে। আর এই কমলা চাষে ভাগ্য বদলেছে পাহাড়ের অনেক কৃষকের অর্থনীতি। আর ভূ-প্রকৃতির কারণে কমলা চাষের উপযোগী হওয়ায় অন্যান্য ফলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কমলার বাগানও।
বাগান মালিক কৃষক সুদত্ত কার্বারী বলেন, ৪ বছর আগে সখের বসে ১৫টি কমলার চারা নিয়ে পাহাড়ি জমিতে কমলা চাষ শুরু করি। পরে কমলা চারা এবং বীজের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার কমলা চারা দিয়ে ৪ একর জমিতে আবাদ শুরু করি। এই কমলা সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় এর বেশ চাহিদা রয়েছে জেলা এবং জেলার বাহিরে। স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ৩শ` থেকে ৪শ` টাকায় বিক্রি করা হয় এই কমলা। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করা এই কমলা বাগান নিজেকে যেমন স্বাবলম্বী করেছে তেমনি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি প্রণোদনা পেলে কমলা চাষ আরও বাড়ানো সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটির অতিরিক্ত পরিচালক তপন কান্তি পাল বলেন, জেলায় কমলা চাষ বাণিজ্যিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকরা কমলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কমলা চাষে পরিচর্যাটা বেশি প্রয়োজন হয়। আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ হতে বাগান মালিকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
পাহাড়ের লাল মাটিতে কমলা চাষ উপযোগী। গত বছরের তুলনায় এবার কমলার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এবার রাঙামাটি জেলায় ৬৩৭ হেক্টর জমিতে কমলার বাগানে ফলন এসেছে। আশা করা যায় প্রতি হেক্টরে ১০ টনের বেশি ফলন হবে।
ইএইচ