পৌষের এই শীতে রাঙ্গামাটির জনবহুল রাস্তায় (ফুটপাতে) পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি। প্রতিটি দোকানেই দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। জেলা শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হরেক রকমের পিঠা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাওয়ার পাশাপাশি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাসা-বাড়িতেও।
জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাত ছাড়াও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে ভাসমান বিক্রেতারা পিঠা বিক্রি করছেন। শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দোকানের সংখ্যাও। বিক্রিও হচ্ছে ভালো। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাদের পিঠা বিক্রি।
শহরের শ্রমজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষই তাদের প্রধান ক্রেতা। তবে রাঙ্গামাটিতে বেড়াতে আসা অনেক পর্যটককেও পিঠা কিনতে দেখা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে উচ্চ ও মধ্যবিত্তরাও এসে তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য ফুটপাত থেকে হরেক রকমের পিঠা কিনে নিয়ে যান। পিঠার জন্য প্রচুর ক্রেতা থাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও পিঠা কিনতে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই পৌষের শীতে জেলা শহরের পাবলিক হেলথ অফিসের সম্মুখে, শহীদ মিনারের সামনে, তবলছড়ি আনন্দ বিহারের সম্মুখে, বনরুপা বাজার, মারি স্টেটিডিয়ামের সামনেসহ জেলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ের ফুটপাত ও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে হরেক রকম পিঠা বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিদিন নিদিষ্ট স্থানে দোকানিরা ফুটপাতে মাটির চুলা, এলপি গ্যাস ও কোরোসিনের চুলা নিয়ে বসে যান গরম গরম পিঠা বিক্রি করতে। এসব দোকানে চিতই পিঠা ও সাদা ও লাল বিনি চালের ভাপা পিঠারই কদর বেশি।
ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ী চালের গুড়া, খেজুরের গুড়, নারিকেল দিয়ে ভাঁপা পিঠা তৈরি করে দেওয়া হয়। স্বল্প দামে গরম গরম পিঠা পেয়ে ক্রেতারাও দারুন খুশি। প্রতিটি বড় ভাঁপা পিঠা ১৫ থেকে ২০টাকা ও চিতল পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। মধ্যবিত্ত থেকে নিম্ন বিত্তদের নাগালের মধ্যে থাকার কারণে ভালো বিক্রি করতে পারছে বিক্রেতারা।
জেলা শহরের মারি স্টেটিডিয়ামের সামনে পিঠা বিক্রেতা সাবিনা চাকমা জানান, প্রতিদিন তিনি তিন থেকে চার হাজার টাকার বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিক্রি করেন। এতে তার লাভ হয় ১২শ টাকা থেকে ১৫শ টাকা। এতে বাড়তি আয় হওয়ায় সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
পিঠা খেতে আসা রাঙ্গামাটির নৃত্য শিল্পী সজল ত্রিপুরা বলেন, শীতের দিনে বাড়িতে দাদি, মা-চাচিরা তাদেরকে হরেক রকমের পিঠা বানিয়ে খাওয়াতেন। কিন্তু এখন কালের বিবরতণে আর তেমন পিঠা বানান না কেউ। তাই এখন সুযোগ পেলেই শহরের ফুটপাত থেকে চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠা খাওয়া শেষে বাড়ীর অন্যান্য সদস্যদের জন্য কিনে নিয়ে যায়। আর বাসার সবাই পিঠা খেতে পছন্দ করে।
বিআরইউ