আন্তঃনগর ট্রেনের সুফল পাচ্ছে না কালুখালী উপজেলাবাসী

কালুখালী (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৫, ০২:১১ পিএম
আন্তঃনগর ট্রেনের সুফল পাচ্ছে না কালুখালী উপজেলাবাসী

রাজবাড়ী জেলাকে রেলের শহর বলা হয়ে থাকে। এ জেলায় সর্বমোট ১৫টি রেলস্টেশন রয়েছে।

এর মধ্যে কালুখালী জংশন একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন। ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি জগতি থেকে গোয়ালন্দঘাট পর্যন্ত রেললাইন উদ্বোধন করলে কালুখালী রেলস্টেশন স্থাপিত হয়।

পরবর্তী সময়ে ১৯৩২ সালে গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতি নদীর তীরবর্তী ভাটিয়াপাড়াঘাট পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করলে কালুখালী জংশন স্টেশনে রূপান্তরিত হয়।

ব্রিটিশ শাসনামল ও পাকিস্তান শাসনামল শেষে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে কালুখালী জংশন তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

জানা গেছে, সে সময় চলাচলকৃত সকল ট্রেনের স্টপেজ কালুখালীতে ছিল। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হলে কালুখালী জংশনে স্টপেজ দেওয়া হয়নি। তৎকালীন সরকারের রেলপথমন্ত্রী হন রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম।

সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি পাংশা স্টেশনের স্টপেজ পেলেও কালুখালী জংশনের কোনো ট্রেনেরই স্টপেজ দেওয়া হয়নি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামল শেষ হলে গত ২৪ ডিসেম্বর খুলনা-নড়াইল-ঢাকা ও বেনাপোল-নড়াইল-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন চালু হয়। এতে সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি বর্তমান রুটে বহাল থাকবে বলে জানা গেছে।

২০১০ সালে কালুখালী উপজেলা প্রতিষ্ঠা হলে ২০১৩ সালে কালুখালী রেলওয়ে জংশনের প্লাটফর্ম সহ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়। বর্তমানে কালুখালী জংশন স্টেশনটি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অন্যতম আধুনিক স্টেশন। যাত্রী চাহিদার জন্য ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ও নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেনের সবগুলো টিকেট বিক্রি হয়ে থাকে। অধিক যাত্রী চাহিদা থাকায় সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ খুবই প্রয়োজন কালুখালী জংশনের জন্য।

গার্মেন্টস ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর সরদার বলেন, আমি প্রতিনিয়ত ঢাকা মালামাল ক্রয় করতে যাই। বেশিরভাগ সময়ে স্টেশনে গেলে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট পাই না। এই রুটে চলাচলকারী সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ থাকলে ঢাকা যাতায়াত সুবিধা হতো।

খুলনায় একটি বেসরকারি কোম্পানির চাকরিজীবী রাজেশ সরকার বলেন, চাকুরির সুবাদে আমি খুলনাতে যাতায়াত করি। কালুখালী জংশনে স্টপেজ না থাকায় প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে পাংশা স্টেশনে এসে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে যাতায়াত করতে হয়।

ভারতে চিকিৎসা গ্রহণকারী ইমরান হোসেন বলেন, আমি বেনাপোল বর্ডার হয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য যাতায়াত করি। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের কালুখালী জংশনে যাত্রাবিরতি থাকলে আমার মত শত শত মানুষের উপকার হতো।

এ ব্যপারে কালুখালী জংশন স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার রতন সেন বলেন, স্টপেজের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আমরা কোনো নিদের্শনা পাইনি। পেলে আপনাদের জানাতে পারবো।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহা. মেহেদী হাসানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্টপেজের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি নতুন স্টপেজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় তখন বিবেচনা করা হবে। অগ্রিম আমি কিছু জানাতে পারছি না।

ইএইচ