যশোরের অভয়নগরে মহাকাল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবাসী।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলেছে ভুল করে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার জানালেন এলাকাবাসীর চাপে কাজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অধ্যক্ষের কারসাজিতে এ কাজ হচ্ছে দাবি করে ক্ষোভে ফুঁসছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, শিক্ষা ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ১ কোটি ৬১ লাখ ৭৪ হাজার ৪শ` টাকার বাজেটে অভয়নগরে মহাকাল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের ১তলা উপর ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তালার কাজের অনুমতি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুস সামাদ। তিনি কাজটি নগদ টাকা লাভে বিক্রি করে দেন যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গ্রিন এন্টারপ্রাইজের মালিক হাফিজুর রহমান খশরুর কাছে। কাজের মেয়াদ প্রায় ৬ মাস আগেই শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি দ্বিতীয় তলার কাজ শুরু করেন।
দ্বিতীয় তালার ছাদ ঢালাইয়ের সময় নিম্নমানের খোয়া ও মরিচাপড়া রড দিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করেন। পরে একই মানের সামগ্রী দিয়ে তৃতীয় তালার কাজ করার সময় এলাকাবাসীর নজরে আসলে তাদের বিক্ষোভের মুখে কাজটি বন্ধ করে দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ফয়সাল খান ও কথিত সভাপতির দায়িত্বে চলছে নির্মাণকাজ। প্রতিষ্ঠানের কাজে শিক্ষকদের মধ্য থেকে একটি নির্মাণ কমিটি করে দেয়া হয়েছে। তাদের তত্বাবধানে চলছে কাজটি।
নির্মাণ কমিটির সদস্য খান এ মজলিশ বলেন, আমি নির্মাণ কমিটির কেউ নই। অধ্যক্ষ ফোন করে ডেকে পাঠিয়েছেন।
কলেজের সভাপতি দাবি করা শাহাজান সিরাজ বলেন, কাজের মান ভালো হচ্ছে। আমি এখনও সভাপতি নিয়োগ সংক্রান্ত কোন চিঠি পাইনি। তবে চেষ্টা চলছে আমি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নিযুক্ত হবো।
এ সময় কলেজের শিক্ষকরা জানান, অধ্যক্ষের অনিয়মের কারণে এই প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হতে বসেছে। ভবন নির্মাণের সময় নিম্নমানের খোয়া ও মরিচাপড়া রড ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের কোন কথা শোনেননি অধ্যক্ষ।
মহাকাল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফয়সাল খান বলেন, সভাপতির কাগজ ডিসি অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত উনি সভাপতির দায়িত্ব পাবেন। কাজের মান খারাপ হওয়ার কারণে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গ্রিন এন্টারপ্রাইজের মালিক হাফিজুর রহমান খশরু বলেন, কাজটি আমি মেসার্স আব্দুল সামাদের নিকট থেকে ক্রয় করে কাজ করছিলাম। কিন্তু যেখান থেকে আমি খোয়া ক্রয় করেছি সেখান থেকে ভুল করে কিছু নিম্নমানের খোয়া দিয়ে দিয়েছে। আমি এই খোয়া পাল্টে ভালো খোয়া দিয়ে কাজ করব।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে যশোরের শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগে কাজটি বন্ধ রয়েছে। অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করে পুনরায় কাজ চালানো হবে।
ইএইচ