নাগরপুরে লাগামহীন চাল-তেলের দাম

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
নাগরপুরে লাগামহীন চাল-তেলের দাম

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে শীতের শাকসবজির দাম কমলেও চাল-তেলের বাজারে আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। চালের দাম তো বেড়েছেই, খোলা তেলের সঙ্গে বোতলজাত তেলের দামও বেড়েছে। টিসিবির হিসাবে গত এক সপ্তাহে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ। 

অর্থাৎ প্রতি লিটারে বেড়েছে ১০ টাকার বেশি। গত কয়েক  মাসে বোতলজাত সয়াবিন কয়েক ধাপ বাড়ানোর পরও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে সব ধরনের চালের মূল্য বেড়েছে। চালের ধরন ভেদে কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত মূল্য বেড়েছে।

আমরা মনে করি, হঠাৎ করে চাল-তেলের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এটা অতি মুনাফাখোর ও লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কখনোই ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনা করে না। বিক্রেতাদের অভিমত আমরা বেশি মূল্য দিয়ে কিনলে কম মূল্যে বিক্রি করব কীভাবে? বেশি মূল্য দিয়ে কিনেছে নাকি কম মূল্য দিয়ে তাদের এই বক্তব্য কি প্রমাণ সাপেক্ষ। তারা যে অজুহাত তুলেছে এই অজুহাত অত্যন্ত পুরানো। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে ভাত-প্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে, তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। 

বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চাল নির্ভর। মনে রাখতে হবে, চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ভোজ্যতেলের দামও। কারণ এ দুটো পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। চালকল মালিকরা নতুন ধানের দাম বেড়েছে বলে দাবি করলেও গতবারের চেয়ে দাম কত বেড়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর কারো জানা নেই।আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দুবছর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ২৫০ টাকা। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। আর চাল-তেলের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। 

এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী, কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রুত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাঁদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন চাল-ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

আরএস