কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২৪ জনের নামে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর লতিবাবাদ গ্রামের আবু তাহের ভুঁইয়ার ছেলে তহমুল ইসলাম মাজহারুল।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আসামি করা হয়েছে শেখ রেহানা, সজিব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান সিদ্দিক ববি, তারিক আহমেদ সিদ্দিক, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মুরাদ হাসান, আব্দুল কাহার আকন্দ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মসিউর রহমান হুমায়ুন, অজয় কর খোকন, কবির বিন আনোয়ার, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমান, শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক,শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক এমপি নাজমুল হাসান পাপন, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএমএর সেক্রেটারি ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদলসহ মোট ১২৪ জনের নাম রয়েছে।
এজাহারে মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনে ছাত্র জনতার গড়ে উঠা আন্দোলনকে দমন করতে দেশ বিদেশে অবস্থানরত আসামিরা সারাদেশে গণহত্যার পরিকল্পনা করে। কিশোরগঞ্জে অবস্থানরত আসামিরা আন্দোলন দমাতে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করে এবং গণহত্যার নির্দেশ প্রদান করে।
গত বছরের ৪ আগস্ট বেলা ১২ টার দিকে মামলার বাদী ও তার কয়েকজন সঙ্গী ছাত্র জনতার মিছিলে অংশ নিলে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করে। আহতদেরকে পরে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাদী চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মোট ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে।
তবে এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আসামি করা হলো। মামলায় আবদুল হামিদ তিন নম্বর আসামি। মামলায় আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী তহমুল ইসলাম মাজহারুল জানান, তিনি বিএনপির একজন কর্মী। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে আহতদের তালিকায় তার নাম রয়েছে। আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি এখন কিছুটা সুস্থ হওয়ায় মামলা দায়ের করেছেন।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ‘মামলাটি তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. জালাল উদ্দিন বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মামলা করায় কোনো আইনি বাধা নেই। যে কেউ চাইলে মামলা করতে পারেন।
বিআরইউ