ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শাহিন মিয়া। তিনি গত ১৫ দিন যাবত ইউনিয়ন পরিষদের ধারস্থ হচ্ছেন একটি ওয়ারিশ সার্টিফিকেটের জন্য। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আত্মগোপন থাকায় চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জটিলতায় দিনের পর দিন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তিনি।
বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জরুরি টাকার প্রয়োজন, তাই পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছেন তিনি। কিন্তু ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নিতে না পারায় সেই সম্পত্তি বিক্রি না করার ও আক্ষেপ করেন তিনি।
তারমতো কুদ্দুস মিয়া, মুরাদ মিয়া, রহিম মিয়াসহ মানিকপুর ইউনিয়নের প্রায় শতশত সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন এরকম হয়রানি ও ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
ইউনিয়ন পরিষদের সেবাগ্রহীতারা তাদের জরুরি সেবাগুলো তাৎক্ষণিক নিতে না পারায় সকলের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্যানেল চেয়ারম্যান না থাকায় চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে৷ এ কারণে লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে৷
এ ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে ইউনিয়নবাসীর ভোগান্তি দূরীকরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন ইউনিয়নবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই আত্মগোপন চলে যান আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান হাজী ফরিদ উদ্দিন। তার অনুপস্থিতিতে পরিষদের যাবতীয় কাজ প্যানেল চেয়ারম্যানের করার নিয়ম থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাউকে ওই পদে নিযুক্ত করেননি৷ ফলে পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে৷
প্যানেল চেয়ারম্যান না থাকায় জন্মনিবন্ধন সনদ, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, পরিচয়পত্র না পাওয়ায় জমি রেজিস্ট্রি, প্রত্যয়নপত্র, নিবন্ধনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইউনিয়নবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন৷ জন্মনিবন্ধন সনদ না পাওয়ায় ভোটার হালনাগাদেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে এই ইউনিয়ন পরিষদের।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই চেয়ারম্যান সাহেব পলাতক রয়েছেন। তিনি একটি হত্যা মামলার ও আসামি। তিনি না থাকায় ইউনিয়নের অনেক মানুষ হয়রানি হচ্ছে। আমরা চাই মানুষ যাতে হয়রানি না হয়।
হয়রানি ও ভোগান্তির বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. লোকমান হোসেন কথা বলতে রাজি হননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বলেন, আমি নতুন এসেছি। এ বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি, যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
ইএইচ