সংযোগ সড়কের অভাবে ২৪ কোটির সেতু অকেজো

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম
সংযোগ সড়কের অভাবে ২৪ কোটির সেতু অকেজো

গাইবান্ধার কাটাখালি নদীর ওপর সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সহজ সড়ক যোগাযোগের উদ্দেশ্যে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি আট বছরেও এলাকাবাসীর জন্য ফলপ্রসূ হয়নি।

মাত্র এক কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের অভাবে সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করা সম্ভব হয়নি। ফলে দুই উপজেলার মানুষকে ৭০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে, যা তাদের সময় ও অর্থের অপচয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, ত্রিমোহনীঘাটে সাঘাটা উপজেলার রামনগর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন দুই উপজেলার মানুষ। প্রায় ১০০ বছরের স্বপ্ন পূরণ হলেও, সেতুটির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। সেতুটির দক্ষিণ পাশে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিষপুকুর গ্রামের মাত্র এক কিলোমিটার সড়ক সংস্কার না হওয়ায় সেতুর ব্যবহার এখনো সম্ভব হয়নি।

সেতুর ওপারে বিষপুকুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সাবু মিয়া বলেন, এ রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় যানবাহন চলাচল শুরু হচ্ছে না। একই এলাকার শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সেতু তৈরি হওয়ার পর থেকে সামান্য সড়কের জন্য আমরা অনেক দৌড়ঝাঁপ করেছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের কাজিপাড়া থেকে নয়াপাড়া বাজার পর্যন্ত মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করলে ৭০ কিলোমিটার ঘুরপথ আর পাড়ি দিতে হবে না। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বোনারপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী জিয়াউল করিম বলেন, বিগত সরকারের সময় উন্নয়নের নামে শুধু লুটপাট হয়েছে। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় ‘কনস্ট্রাকশন অব লং ব্রিজ-১’ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর কাটাখালি নদীর ওপর ৪০২৫ মিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় হয় ২৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়। সাঘাটা অংশে তিন কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন করা হলেও গোবিন্দগঞ্জ অংশে বিষপুকুর গ্রামের এক কিলোমিটার সড়ক সংস্কার না হওয়ায় সেতুটি ব্যবহার শুরু হয়নি।

কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খন্দকার জানান, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু সড়ক সংস্কারের কাজ এখনো শুরু হয়নি। তবে আমরা আবারও চেষ্টা করব।

সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী নয়ন রায় জানান, সাঘাটা অংশের সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। তবে অপর পাশের সড়কে কী সমস্যা রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে।

এলাকাবাসী আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিগগিরই সমস্যার সমাধান করবে, যাতে সেতুটির কার্যকারিতা বাস্তবায়িত হয় এবং তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর হয়।

ইএইচ