পাবনায় কোনো পদক্ষেপই নিয়ন্ত্রণে আসছে না চালের বাজার। নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে চালের বাজার। চিকন চাল থেকে মোটা চাল সব ধরনের চালের দাম বেড়েই চলেছে। একমাস ধরেই সব জাতের চাল কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৮ টাকা।
বাজারের তথ্য অনুসারে, মিনিকেট চাল মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৪ টাকায়, চিকন জাতের চালের খুচরা মূল্য মানভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা।
মাঝারি ও মোটা জাতের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৬ টাকায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরবরাহ বাড়িয়ে বাজারে সার্বিক খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে ৭ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৩ লাখ টন গম আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয়কে চিহ্নিত করেছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
কারণ বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিবহণ খরচ বেড়েছে, কৃষি শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। বেড়েছে কৃষি যন্ত্রপাতির দাম। বেড়েছে সার, কীটনাশকের দামও। আরও বেড়েছে ক্ষেতে পানি সরবরাহ দেওয়ার ডিজেল-কেরোসিন ও বিদ্যুতের দাম।
এছাড়া সার্বিকভাবে বেড়েছে জীবনযাত্রার মান। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি হওয়ায় সরকারের সিদ্ধান্তের পরেও চাল আমদানি পরিস্থিতি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। ফলে প্রভাব পড়ছে চালের বাজারে। কয়েক স্তরে হাতবদলের কারণে বাজারে চালের দাম বাড়ে।
জানা গেছে, উৎপাদনকারী কৃষকের মাঠ থেকে খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে ভোক্তার হাতে চাল তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েক স্তরে হাতবদল হয়। প্রত্যেক স্তরেই মুনাফা লাভের কারণে সার্বিকভাবে বেড়ে যায় চালের দাম। সরকারের কোনও উদ্যোগেই হাতবদলের এই স্তর সংখ্যা কমানো যাচ্ছে না। কৃষকের গোলার ধান মিলারদের কাছে যায়। সেখান থেকে মোকামের আড়তদার, মোকামের আড়তদার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের চালের আড়তদার, সেখান থেকে হাতবদল হয়ে পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী, সেখান থেকে খুচরা ব্যবসায়ী হয়ে ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে হয় চাল। পরিবহণ খরচ বাদ দিয়ে প্রত্যেক স্তরেই কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা মুনাফা ধরে হাতবদল হওয়ার কারণে প্রতি কেজি চালের দাম বাড়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা। ফলে ৫০ টাকার চালের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা।
এদিকে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে না আসার আরেকটি কারণ হলো সরকারি মজুদ কম হওয়া।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের ভাষ্য হলো, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চাল সংগ্রহে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটের হাত থাকার কথাও অনেকে বলেন । চালের দাম নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার গত ৩১ অক্টোবর আমদানি শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে। কিন্তু চালের বাজারে তার দৃশ্যমান প্রভাব নেই।
ইএইচ