পূবাইলে মায়ের পরকীয়ার বলি হলো ছেলে

রবিউল আলম, পূবাইল (গাজীপুর) প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫, ০৪:০৫ পিএম
পূবাইলে মায়ের পরকীয়ার বলি হলো ছেলে

গাজীপুর মহানগরের পূবাইলে মা স্বপ্না খাতুনের পরকীয়ার বলি হলেন তার ছেলে সোলেমান হোসেন সম্রাট (১৭)।

অবৈধ পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়ে মায়ের পরামর্শে পরকীয়া প্রেমিক আমির আলির হাতে প্রাণ দিত হলো ছেলে সোলেমান হোসেন সম্রাটকে।

নিহত সম্রাট উত্তরার আবদুল্লাহপুরে একটি অনলাইন শপে কাজ করতো।

এ বিষয়ে শনিবার সম্রাটের ফুফা টিপু সুলতান বাদী হয়ে পূবাইল থানায় একটি হত্যা মামলা করলে পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম পূবাইল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরকীয়ার প্রেমিকযুগল স্বপ্না খাতুন ও আমির আলীকে আটক করতে সক্ষম হন।

অন্যদিকে শনিবার সকাল ১১টায় সম্রাটের ডুবন্ত লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছে পরকীয়ার জড়িত আমিরের বাড়ির পাশের সুলতানের পুকুর থেকে।

ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরকীয়া ও হত্যায় জড়িত স্বপ্না ও আমিরকে আটক করলেন পূবাইল থানা পুলিশ।

রোববার সকাল ১১টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) এন এম নাসিরুদ্দিন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

আটক স্বপ্না খাতুন গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার নিয়ামতের বাইগুনি গ্রামের আব্দুল হামিদ প্রামাণিকের মেয়ে। বর্তমানে পূবাইল থানার ৪০নং ওয়ার্ডের কুদাব এলাকায় রিনার বাসার ভাড়াটিয়া।

স্থানীয় আমির আলী পূবাইল থানার ৪২নং ওয়ার্ডের সাতপোয়া এলাকার মো. জামির উদ্দিনের ছেলে।

ঘটনা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুই সন্তানের জননী স্বপ্না খাতুনের স্বামী জাকির হোসেনের সাথে দীর্ঘদিন যাবত তার বনিবনা হচ্ছিলো না। সেই সুযোগে স্থানীয় আমির আলির সঙ্গে অবৈধ পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে স্বপ্নার।

বিষয়টি স্বপ্নার বড় ছেলে সম্রাটের নজরে আসলে সে বিভিন্নভাবে তাদের বাধা দেয়। অবৈধ পরকীয়ার সম্পর্কের কাঁটা সরাতে গিয়ে উভয়ই সম্রাটকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফোন করে আমির আলী সম্রাটকে পূবাইল করমতলা রেললাইনের পাশে ডেকে নেয়। সম্রাটকে শারীরিক যৌন উত্তেজনার ওষুধের কথা বলে ইঁদুরের ওষুধ গ্লাসে মিশিয়ে খেতে বলে। অপরপক্ষে সে নিজে খায় যৌন উত্তেজনার ওষুধ। ইঁদুরের ওষুধ মিশ্রিত পানি পান করে সম্রাট মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে রেললাইনের পাশে সুলতানের মাছ চাষের পুকুরে ফেলে দিয়ে চলে যায় মৃত্যুর খবর পৌঁছাতে ও রাত কাটাতে তার মা স্বপ্নার কাছে।

শনিবার সকালে পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশ খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।

হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আসামি স্বপ্না খাতুন ও আমির আলীকে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রহস্য উদঘাটনে অধিকতর তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম।

ইএইচ