আগাম আলু চাষে দ্বিগুণ লোকসান গুনছেন কৃষকরা

তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫, ০৫:০২ পিএম
আগাম আলু চাষে দ্বিগুণ লোকসান গুনছেন কৃষকরা

লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করে ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে রাজশাহীর তানোরের চাষিদের।

উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন চাষিরা। যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তার অর্ধেক টাকাও তুলতে পারছেন না চাষিরা। এতে করে মাথায় হাত পড়েছে আগাম আলু চাষিদের। কারণ রোপণের সময় বীজ সার বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। এজন্য খরচও অনেক বেশি হয়েছে বিগত বছরের তুলনায়। ফলে লোকসানে দিশেহারা চাষিরা।

গুবিরপাড়া গ্রামের আলু চাষি মোমিন গত বৃহস্পতিবার ডাকবাংলো মাঠের উত্তরে দেড়বিঘা জমিতে আগাম আলু উত্তোলন করেছেন। সে জানায়, গত বছর দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষ করে দ্বিগুণ লাভ হয়েছিল। এবারো লাভের আশায় সবকিছু বাড়তি দামে কিনে দেড়বিঘা জমিতে আলু চাষ করে গত বৃহস্পতিবার উত্তোলন করেছি। প্রতি কেজি আলু ১৪ টাকা ২৫ পয়সা দরে বিক্রি করেছি। দেড়বিঘা জমিতে ৭০ কেজির বস্তায় ৪০ বস্তা করে ফলন হয়েছিল। দেড়বিঘা জমিতে খরচ হয়েছিল ৭১ হাজার টাকা। ৪০ বস্তার বিপরীতে ৩১ হাজার টাকা পেয়েছি। ৪০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।

কামারগাঁ ইউপির জমসেদপুর মাঠে ৪ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে প্রচুর লোকসান গুনতে হয়েছে চাষি ওলিকে।

তিনি জানান, সবকিছু বাড়তি দামের কারণে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা করে। বিঘায় ফলন হয়েছে ৩৪ বস্তা করে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ১৪ টাকা কেজি দরে। ৪ বিঘায় লোকসান প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা হবে।

ধানতৈড় গ্রামের কৃষক মুনসুর জানান, কয়েকদিন আগে গোকুল গ্রামের এনামুল ৪ বিঘা জমিতে আলু উত্তোলন করেছে, বিঘায় ৩৪ বস্তা করে ফলন হয়েছে। প্রতি কেজি ১৪ টাকা করে বিক্রি করেছে। একই গ্রামের রাব্বানী ২ বিঘা, ইব্রাহিম ১ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে মাথায় হাত পড়েছে।  

চাষিরা জানান, আলু রোপণের জন্য এত পরিমাণ খরচ হত না। কারণ বীজ সার দ্বিগুণ দামে কিনতে হয়েছে। এক বস্তা ব্র্যাকের বীজ কিনতে হয়েছে প্রকার ভেদে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে। বিগত কয়েক মৌসুমে বাম্পার লাভ পেয়ে আলু চাষে সবাই ঝুঁকে পড়েছে । সেই সুযোগে বীজ সার ও জমি লিজে প্রচুর বাড়তি টাকা গুনতে হয়েছে। আলু চাষে এক প্রকার প্রতিযোগিতা শুরু করেছিলেন চাষিরা। এ কারণে উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বেশি।

কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, এবারে আলুর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিকটন।

ইএইচ