টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় চলতি বছরে তামাক আবাদ ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনার চরাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে তামাক পাতার চাষ।
দেশি-বিদেশি সিগারেট কোম্পানিগুলো অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে কৃষকদের তামাক চাষে আগ্রহী করে তুলছে। তামাক চাষে অগ্রিম টাকা দেয়ার কারণে কৃষকরাও এতে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। এ চাষে নারী ও শিশুরাও অধিক হারে জড়িত।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৪৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল। তবে চলতি বছর তা ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১১৫ হেক্টর জমিতে তামাক আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের গাবসারা ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর, পুংলিপাড়া, জুঙ্গিপুর, রুলীপাড়া, রায়েরপাড়া, বাসালিয়া, গোবিন্দপুর, রামপুর; অর্জুনা ইউনিয়নের রামাইল, শুশুয়া, কাশিয়াটা; নিকরাইল ইউনিয়নের পাথাইল কান্দি, পলশিয়া এবং পৌর এলাকার বামনহাটা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় তামাক চাষ হচ্ছে। নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও তামাক খেতে কাজ করছে। তামাক পাতার প্রক্রিয়াজাতকরণে দীর্ঘ সময় ব্যয় হওয়ায় তামাক শ্রমিকরা শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
একজন তামাক শ্রমিক দিন শেষে ৩০০-৪০০ টাকা মজুরি পান। অনেক শিক্ষার্থীও তামাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। তারা কেউ আইলচা বাঁধছে, কেউ গাছ থেকে পাতা ভাঙছে বা শুকাচ্ছে, আবার কেউ শুকানো তামাক বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। শিশুদের মজুরি দিন শেষে ১৫০-২০০ টাকা দেওয়া হয়।
উপজেলার চরাঞ্চলের তামাক চাষিরা জানান, গম, ভুট্টা ও বাদামের মতো ফসলের তুলনায় তামাক চাষে লাভ বেশি। সিগারেট কোম্পানিগুলো অগ্রিম টাকা দেয়। পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও বেশি লাভ ও আগাম টাকার কারণে প্রতিবছরই তামাক চাষ করি।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “তামাক চাষ করলে মাটির উর্বরতা কমে যায়। এটি পরিবেশের ক্ষতি ও স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়। চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের তামাক চাষ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মাঠ দিবস ও কৃষক সমাবেশে তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারপরও কিছু কৃষক আর্থিক প্রলোভনে তামাক চাষ অব্যাহত রেখেছেন।”
ইএইচ