‘শরীরে ৬টি গুলি নিয়ে যন্ত্রণায় ইমরান’

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম
‘শরীরে ৬টি গুলি নিয়ে যন্ত্রণায় ইমরান’

ইমরান হোসেনের শরীরে এখনো অসংখ্য গুলির ক্ষত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে এখনো ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি।

আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন ইমরান। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় বিকেলে লংমার্চ টু ঢাকা মিছিলে অংশ নেন তিনি।

এ সময় মারমুখী পুলিশের ছোড়া গুলি তার সারা শরীরে বিদ্ধ হয়। একইসঙ্গে আহত হয় তার বাবা জহুরুল ইসলামও। বর্তমানে আর্থিক সংকটে চিকিৎসা করাতে না পেরে শরীরে থাকা গুলি নিয়ে নিজ বাড়িতে অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে তার।

ইমরানের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের দুধবাড়িয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মো. জহুরুল হোসেনের ছেলে।

অভাবের তাড়নায় ঢাকাতে থাকতেন তিনি। তার বাবা রিকশা চালক এবং ফুটপাতে ডিম বিক্রি করতেন, সেই সুবাদে তারা ঢাকার আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় বসবাস করতেন।

পরিবারের সাথেই থাকতেন তিনি। স্বৈরাচার সরকারের পতনের জন্য ছেলে ইমরান তার বাবা-মাকে নিয়ে যোগ দেন মিছিলে। সেখানেই তার শরীরে পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিবিদ্ধ হন।

আহত ইমরান জানান, ‘আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় মিছিলে যোগ দেয়ার সময় পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করার জন্য ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় আমার শরীরে অসংখ্য ছররা গুলি লাগে।’

বলেন, ‘আমার দুই পায়ে, বুকে, পিঠে এবং সারা শরীরে গুলি লাগে। এ সময় আমার ছেলের চোখে, ঠোঁটে ও নাভিতে গুলি লাগে।’

অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না ইমরান। বর্তমানে তিনি গ্রামের বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এদিকে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছররা গুলি থাকায় হাঁটাচলা ও চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে তার। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। বর্তমানে শরীরে থাকা গুলি বের করতে অপারেশন করতে হবে, যা করতে প্রয়োজন অনেক টাকার। তবে তার কাছে বিক্রি করার মতো কোন জমি বা সম্পদ নেই, তাই চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

ইমরানের বাবা জহুরুল বলেন, ‘আন্দোলন শুরু হলে আমার স্ত্রী-সন্তানসহ আমরা আন্দোলনে অংশ নিই। গত ৫ আগস্ট আমার সন্তানকে পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে বিদ্ধ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এখন অর্থের অভাবে দুধবাড়িয়া নিজ বাড়িতে রয়েছি। ইমরান ও আমি পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। এ অবস্থায় সংসার চালানো এবং সন্তানের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।’

তিনি সরকারের কাছে তার সন্তানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন।

ইএইচ