কুষ্টিয়ার মিরপুরে বিএনপি নেতার সেই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা, জরিমানা

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম
কুষ্টিয়ার মিরপুরে বিএনপি নেতার সেই  ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা, জরিমানা

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা বিএনপি‍‍`র সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বানীর পরিচালিত বহু বিতর্কিত সেই জয়মন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা ও দুই লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। 

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত তিন ঘন্টাব্যাপী অভিযানটি পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মহসিন উদ্দিন এ সময়ে সেনাবাহিনী, ডিবি ও থানার বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। মে‌ডি‌কেল প্র‌্যাক‌টিস ও বেসরকা‌রি ক্লিনিক ও ল‌্যাব‌রেট‌রি (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ধারা ১৩(২) মোতা‌বেক ক্লিনিকের ম্যানেজার সোহেল মোল্লাকে ৫,০০০/- অর্থদণ্ড, অনাদা‌য়ে ০৭ দি‌নের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং একইসা‌থে সেবাগ্রহীতার জীবন ও নিরাপত্তা বিপন্নকারী সেবা প্রদান করা হ‌চ্ছে ম‌র্মে প্রতীয়মান হওয়ায় ভোক্তা অ‌ধিকার আইন, ২০০৯ এর ৫২ ধারা মোতা‌বেক ক্লিনিকের মালিক রহমত আলী রব্বান কে ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদা‌য়ে ৩০ দি‌নের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হ‌য়ে‌ছে। সমুদয় অর্থদণ্ড ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা ঘটনাস্থলেই আদায় শেষে জয়মন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। তবে ওই সময়ে একজন সিজারিয়ান পেশেন্ট থাকার কারণে তাকে ক্লিনিকটির বিপরীতে অবস্থিত মিরপুর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল স্থানান্তরিত করা হয়।

বহু বিতর্কিত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাক্ষী জয়মন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা হয় এলাকার মানুষ একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সরকারের পতনের পর পরই কুখ্যাত রহমত আলী রব্বান ও তার ছোট ভাই ইব্রাহিম আলী এবং জাহেদ আলীর নেতৃত্বে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নেয়। উক্ত হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনের জন্য তাদের হাতে গড়া অবৈধ অস্ত্রধারী বাহিনীর লোকজন ওপেন অস্ত্রের মহড়াসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে থাকে যার ফলে কিছু কর্মকর্তা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।

এরপর শুরু হয় ভর্তিকৃত পেশেন্টদের অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে ক্লিনিক এর সাথেই তাদেরই মালিকানা জয়মন ফার্মেসি হতে ঔষধ কেনা এবং অতিরিক্ত চার্জ দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে বাধ্য করানো হয়।

রহমত আলী রব্বান ও তার ভাই সকলের দ্বারা পরিচালিত ফার্মেসি, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসার আড়ালে বিশেষ বিনোদনের কারবার রয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। 

সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল  এক ব্যক্তি জানান, এখানে সিজার করার সুন্দর বন্দোবস্ত রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে সিজার হওয়ার পরও একাধিক প্রসূতিকে জোর করে তার ক্লিনিকে ভর্তি করান। রব্বানের এই অবৈধ সাম্রাজ্যের পতন না হলে মিরপুরের বহু সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব হবে না। পাশাপাশি তাদের এই অপকর্মগুলো অব্যাহত থাকলে আগামী নির্বাচনে দলটির অনেক বড় খেসারত দেওয়া লাগতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।

আরএস