সংযোগ রাস্তা না থাকায় কাজে আসছে না সাড়ে ৩ কোটির সেতু

রওশন আলম, মান্দা (নওগাঁ) প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম
সংযোগ রাস্তা না থাকায় কাজে আসছে না সাড়ে ৩ কোটির সেতু

বর্ষা মৌসুমে বিলের পানি ওঠে, তখন নৌকায় চলাচল করতে হয়। খরা মৌসুমে আবার ভাঙাচুরা রাস্তা পার হয়ে যাতায়াত করতে হয়। এই দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।

সরেজমিনে শংকরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিলের ভেতর দিয়ে চলাচলের রাস্তা আধাভাঙা অবস্থায় রয়েছে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল নিয়ে, আবার অনেকেই চার্জারভ্যানে যাতায়াত করছেন। স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে কিছুটা রাস্তাটি উপযোগী করতে মাটি কেটে ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের অন্তত ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। এটি উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চৌবাড়িয়া হাটে যাওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম, পাশাপাশি নওগাঁর নিয়ামতপুর ও রাজশাহীর তানোর উপজেলায়ও এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যায়।

তবে, স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণের পাশাপাশি রাস্তা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এলজিইডি দপ্তর কোনো সংযোগ রাস্তা না দিয়ে, শুধুমাত্র বিলের মাঝখানে সেতুটি নির্মাণ করেছে। রাস্তা না থাকায় ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার সেতুটি জনগণের কোনো কাজে আসছে না।

উপজেলা এলজিইডি দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যর সেতুটির নির্মাণে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৬ টাকা ব্যয় হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কাজটি শেষ হয়।

শংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর হোসেন বলেন, "এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ চলাচল করে। বছরের ছয় মাস রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী থাকলেও, বাকি সময় নৌকা বা কাদাপানি ভেঙে চলাচল করতে হয়।"

পলাশবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা দিলিপ কুমার প্রামাণিক জানান, "এত বড় টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, তবে রাস্তা না থাকায় এটি এখন কার্যত অকার্যকর।"

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, "সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও পুরো প্রকল্প এখনও সম্পন্ন হয়নি। সংযোগ রাস্তার নির্মাণের জন্য মাটি সংগ্রহের কাজ চলছে। মাটি পেলে সেতুটির সংযোগ রাস্তা নির্মাণ করা হবে।"

ইএইচ