রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, সয়াবিন তেল সংকট চরমে

শিমুল হাছান, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, সয়াবিন তেল সংকট চরমে

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে রমজানকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং সয়াবিন তেল সংকট থামছে না।

বৃহস্পতিবার উপজেলা সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু পাইকারি ১৭ টাকা বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রেতারা ২৫ টাকা দরে বিক্রি করছে।

রসুন পাইকারি প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রেতারা এক শত টাকা দরে বিক্রি করছে।

শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছে, যা নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে রেখেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন হিমশিম খাচ্ছে। গরুর মাংস একশত টাকা বৃদ্ধি করে হাড় ছাড়া ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করার বিষয়টি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

লেবুতে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১৫-২০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে, বাজারে সয়াবিন তেলে সংকট চরমে এসে ঠেকেছে। আদা ৯০-১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, সিম ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, টমেটো ১৫ টাকা, কুমড়া ৩০-৩৫ টাকা, শিমের বীচি ৯০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের মধ্যে তেলাপিয়া ২১০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৭০ টাকা, সিং ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, ইলিশ ১,২০০ টাকা, কাতলা সাড়ে ৩০০ টাকা, রুই সাড়ে ৩০০ টাকা, মলা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির বাজারও বেড়েই চলছে, সাদা বয়লার ১২০ টাকা, কক ২৭০-২৮০ টাকা, লেয়ার ৩৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে, খাসি ১,৩০০ টাকা ও বকরি ১,১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ কেজি ৪০-৪২, রসুন কেজি ১২০, শসা কেজি ৪০-৪৫ টাকা, গাজর ২৫ টাকা, আলু ২০ টাকা, মরিচ ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একই পণ্য দোকান ভেদে বিভিন্ন দামেও বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচা বাজারের আড়তের মালিক মোস্তফা ও নয়ন সত্যতা স্বীকার করে জানান, একই দিনের কেনা পণ্যের দাম দিনের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন হওয়ার কথা নয়। তাছাড়া, খুচরা বিক্রেতাদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছে, ফলে খুচরা বিক্রেতারা অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছে।

মাংস বিক্রেতা কাউসার ও আনিছ মিয়া জানান, গরুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মাংস কেজি পিছু একশত টাকা বৃদ্ধি করতে হয়েছে।

সয়াবিন তেল সংকট নিয়ে মুদি দোকানি মো. রহমত উল্লা জানান, সয়াবিন তেল কিনতে হলে, ওই কোম্পানীর অন্য কয়েকটি পণ্য বাধ্যতামূলকভাবে ক্রয় করতে হয়, ফলে দোকানিদের সয়াবিন তেল বেচা-বিক্রির প্রতি অনিহা রয়েছে।

শিক্ষক শাহজাহান, কৃষক রেজু মুন্সী, অটো চালক জসিম উদ্দিন, পল্লী চিকিৎসক ডা. দেলোয়ার হোসেনসহ অনেকেই জানান, নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও আড়ৎগুলোতে নিয়ম মেনে চলা দরকার।

রমজানে বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ্ আলম ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা ডেকে গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক টাকা লাভে রমজান সামগ্রী বিক্রি করার দোকান চালু করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া জানান, বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোবাইল কোর্ট জোরদার করবো। এরই মধ্যে এসিল্যান্ডকে দিয়ে বাজার মনিটরিং শুরু করা হয়েছে। রমজানে অধিক মুনাফা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।

ইএইচ