কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দুটি রেলস্টেশন, সরারচর ও বাজিতপুর, যাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
কিশোরগঞ্জ থেকে সরারচর-বাজিতপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলাচল করে এগারসিন্ধুর প্রভাতী, এগারসিন্ধুর গৌধুলী এবং কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস।
তবে, যাত্রীদের চাপের কারণে এই স্টেশনগুলোতে টিকিটের সংকট দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। আর এবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উল্টো পদক্ষেপ নিয়ে সরারচর ও বাজিতপুর স্টেশনের টিকিট বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সরারচর স্টেশন থেকে ২৬টি এবং বাজিতপুর স্টেশন থেকে ৩৮টি টিকিট কমিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। সরারচর স্টেশন থেকে এগারসিন্ধুর প্রভাতী ও গোধূলী ট্রেনের জন্য মোট ২৬টি টিকিট কমানো হয়েছে, যার মধ্যে শোভন চেয়ার এবং কেবিন টিকিটের সংখ্যা কমানো হয়েছে। বাজিতপুর স্টেশন থেকে একই কারণে ৩৮টি টিকিট কমানো হয়েছে।
এর মধ্যে প্রথম চেয়ার, কেবিন এবং শোভন চেয়ার টিকিটের বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
সরারচর স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, এগারসিন্ধুর প্রভাতী ট্রেনের জন্য শোভন চেয়ার ১৫টি থেকে কমিয়ে ১০টি, শোভন ৭৫টি থেকে কমিয়ে ৬০টি এবং কেবিন ৩টি টিকিট বাতিল করা হয়েছে। বাজিতপুর স্টেশন থেকে প্রভাতী এবং গোধূলী ট্রেনের জন্য মোট ৩৪টি টিকিট কাটা হয়েছে।
এদিকে, এসব পরিবর্তনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিয়মিত যাত্রীরা। সরারচর থেকে নিয়মিত যাতায়াতকারী সোয়েব ইসলাম বলেন, "আমাদের একটি টিকিটের জন্য যুদ্ধ করতে হয়। অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপে এখানে টিকিটের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিবর্তে কমিয়ে নেয়া খুবই দুঃখজনক।"
বাজিতপুর স্টেশন থেকে নিয়মিত যাতায়াতকারী মো. আশরাফ বলেন, "আমি ঘড়ির কাটা দেখে টিকিট কেটে রাখি, ১ মিনিট এদিক-সেদিক হলেই টিকিট পাওয়া যায় না। বাজিতপুর স্টেশনটি জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাত্রীদের চাপও বেশি। এখানে টিকিট বরাদ্দ কমানো খুবই হতাশাজনক।"
এ বিষয়ে মো. আমানুর রহমান নামে আরেক যাত্রী বলেন, "বাজিতপুর, সরারচর এবং কুলিয়ারচর স্টেশনে কখনো আসন ফাঁকা থাকে না। তারপরও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঐতিহ্যবাহী স্টেশনগুলোর আসন কেটে অন্য উপজেলায় নিয়ে গেছে। আমাদের মানববন্ধন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে, না হলে এই বৈষম্যের শিকার হব।"
যাত্রীদের দাবী, ট্রেনগুলোর কোচ সংখ্যা বৃদ্ধি করা হোক এবং অন্যান্য স্টেশনকে সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি বাজিতপুর, সরারচর এবং কুলিয়ারচর স্টেশনের জন্য আরও আসন বরাদ্দ করা হোক।
ইএইচ