বরিশাল চুরির অপবাদে দুই যুবককে বেঁধে নির্যাতন

বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৫, ০৮:৪৮ পিএম
বরিশাল চুরির অপবাদে দুই যুবককে বেঁধে নির্যাতন

বরিশাল শহরে চুরির অপবাদে দুই যুবককে বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

রোববার দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ব্রিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এক মিনিট চৌদ্দ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দুটি যুবককে আলাদা করে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এক যুবক মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে এবং তাকে এক ব্যক্তি শক্ত তার দিয়ে পেটাচ্ছে।

জানা গেছে, দোকান থেকে লোহার পাত চুরির অভিযোগে মিঠুন (২০) ও লিংকন (২৩) নামে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে প্রকাশ্যে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের শিকার দুই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নির্যাতন করা অভিযুক্তদের মধ্যে একজন দোকান মালিক মো. হাসান কে আটক করেছে পুলিশ।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন শিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নির্যাতনের শিকার যুবকরা হলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলার দোয়ারিকা গ্রামের চান মুন্সির ছেলে মিঠুন এবং একই গ্রামের বাবুল বেপারীর ছেলে লিংকন।

আটক দোকান মালিক মো. হাসান রহমতপুর ব্রিজ এলাকার সেবা ইঞ্জিনিয়ারিং নামের দোকানের মালিক এবং দোয়ারিকা গ্রামের বাসিন্দা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে রহমতপুর ব্রিজের উত্তর পার্শ্বের ঢালে সেবা ইঞ্জিনিয়ারিং দোকান থেকে কিছু লোহার পাত চুরি হয়। পরদিন দোকান মালিক হাসান জানতে পারেন পাশের ভাঙারী ব্যবসায়ী সাইদুল চোরাই লোহার পাত কিনেছে। এরপর সাইদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মিঠুন ও লিংকনকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন দোকান মালিক হাসান ও স্থানীয় কয়েকজন।

ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে উপুড় করে হাত-পা বেঁধে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে এবং তার পায়ে লোহার রড দিয়ে পেটাচ্ছেন দোকান মালিক হাসান। অপর যুবককে মারধর করে পাশের একটি বিদ্যুতের খুটির সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। দোকান মালিক হাসান, এক নারী এবং স্থানীয় আরও কয়েকজন ব্যক্তি দুই যুবককে মারধরসহ নির্যাতনে সহযোগিতা করছেন। উৎসুক জনতা ঘটনাটি উপভোগ করছে।

এ বিষয়ে দোকান মালিক হাসান বলেন, "আমার দোকানের মালামাল চুরি করে পাশের ভাঙারী দোকানে ৪-৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। ভাঙারি দোকান মালিক এবং অভিযুক্ত দুই যুবকও চুরির কথা স্বীকার করেছে।" তবে, কেন পুলিশে না দিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হলো, এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি হাসান।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন শিকদার বলেন, "খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়, তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। চুরি করা অপরাধ, কিন্তু চোর ধরে আইনের হাতে তুলে না দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা অপরাধ। এজন্য রবিবার বিকেলে অভিযুক্ত দোকান মালিককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।"

ইএইচ