ফরিদপুরে হিমাগারে আলু রাখতে বিড়ম্বনা, দীর্ঘ অপেক্ষায় নষ্ট হওয়ার শংঙ্কা

ফরিদপুর প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৫, ০১:০৮ পিএম
ফরিদপুরে হিমাগারে আলু রাখতে বিড়ম্বনা, দীর্ঘ অপেক্ষায় নষ্ট হওয়ার শংঙ্কা

ফরিদপুরে হিমাগারে আলু রাখতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন আলু ব্যবসায়ী ও চাষিরা। ধীর গতি আর আন লোডের শ্রমিক সংখ্যা কম থাকার কারণে বিপাকে পড়েছেন তারা। দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করেও হিমাগারে আলু রাখতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। এতে আলু নষ্ট হওয়ার শংঙ্কা প্রকাশ করেছেন হিমাগারের সামনে অপেক্ষারত ব্যবসায়ী ও চাষিররা।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকায় ব্যক্তি মালিকানায় ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ফরিদপুর হিমাগার লিমিটেড। আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা প্রতিবছর মার্চ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এখানে আলু সংরক্ষণ করে থাকেন। এছাড়া ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই অল্প দিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করে রাখেন এ হিমাগারে। সুবিধামতো সময়ে তারা আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

হিমাগার সুত্রে জানাগেছে, ফরিদপুর হিমাগার লিমিটেডের মোট ধারণক্ষমতা রয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার বস্তা। বস্তা প্রতি ৬০ কেজি আলু রাখা হয়। প্রতি বস্তার জন্য ৪০৫ টাকা হারে ভাড়া প্রদান করতে হয়। মৌসুমের শুরুতে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, দিনাজপুর, ও রাজশাহী অঞ্চলের চাষি ও ব্যবসায়ীরা এখানে আলু এনে সংরক্ষণ করে রাখেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে হিমাগারটির গেটের সামনে ও আশে পাশের সড়কের পাশে লাইন ধরে পাঁচ-ছয়দিন অপেক্ষা করছে আলু বোঝাই সারি সারি ট্রাক। কিন্তু অপেক্ষার পরেও সময় মতো আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়ছেন তারা। অনেকেই শংঙ্কা প্রকাশ করছেন দীর্ঘ সময়ের কারণে আর প্রচন্ড রোদ ও গরমে নষ্ট হতে পারে ট্রাক ভর্তি আলু।

ট্রাক চালক আকিদুল ইসলাম বলেন, গত চার পাঁচদিন আগে আলু নিয়ে ফরিদপুর এসেছি। রাস্তার পাশে ট্রাক ভর্তি আলু রেখে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। কখন যে আলু আনলোড করতে পারবো এই চিন্তায় আছে। আবার ভয় পাচ্ছি ট্রাকে রাখা আলু প্রচণ্ড রোদ আর গরমে পচন না ধরে।

লালমনিরহাট থেকে আলু নিয়ে আগত ব্যবসায়ী মো. সেলিম মোল্লা বলেন, হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও ডিসেম্বরে বুকিং দিয়েছি। বুকিং দিয়েও সময়মতো আলু রাখতে পারছি না। আমার মতো অনেকেই এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন।

ঝিনাইদহ থেকে আসা আরেক ব্যবসায়ী মমিন শেখ বলেন, গত পাঁচদিন আগে প্রায় ১৩ টন আলু নিয়ে এখানে এসেছি। দীর্ঘ সিরিয়াল। কবে নাগাদ যে হিমাগারে আলু রাখতে পারবো তার ঠিক নেই।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর হিমাগার লিমিটেডের সুপারভাইজার স্বপন কুমার সরকার বলেন, হঠাৎ করে বেশি সংখ্যক ট্রাকের চাপ বেড়েছে। আমাদের আনলোডের শ্রমিকের সংখ্যা কম। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর হিমাগারের ব্যবস্থাপক রুস্তম মোল্লা বলেন, ইতোমধ্যে ৭০ হাজারের বেশি বস্তা আলু হিমাগারে প্রবেশ করানো হয়েছে। এবার অধিক ফলন ও একইসঙ্গে সবাই আলু নিয়ে আসার কারণে এ বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে অপেক্ষায় থাকা ট্রাকগুলোর আলু সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বিআরইউ