অভাবের সংসারে হাল ধরতে ও পড়ার খরচ যোগাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে প্রতিবেশী বিপ্লব হাওলাদারের সাথে মাছ ধরতে গিয়েছিলো ১১ বছরের কিশোর রায়হান মল্লিক। আর এ থেকে যে টাকা পাবেন সেই টাকা দিয়ে ঘরের বাজার ও ঈদে কেনাকাটা করে দরিদ্র বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটাবে কিন্তু তা আর হল না।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ৬ টার দিকে সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী মিতালি- ৫ যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় তাদের মাছ ধরার নৌকা ভেঙ্গেচুরে ডুবে যায় এসময় নৌকা ডুবিতে নিখোঁজ হয় রায়হানও।এরপর থেকে তার আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ হওয়া রায়হান মল্লিক গৌড়িপাশা এলাকার মোহাম্মদ আলী মল্লিকের ছেলে।দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে রায়হান ছিলো ২য়, তার বড় ভাই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে আর ছোট বোনের বয়স ২ বছর। রায়হান মল্লিক একটি নূরানী মাদরাসার ২য় শ্রেনির ছাত্র ছিলো।
নিখোঁজ রায়হানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের আহাজারি। ছেলেকে হারিয়ে হাউ মাউ করে কাঁদছেন মা শিরিন বেগম।
রায়হানের মা শিরিন বেগম বলেন,ঋণ নিয়ে একটা পাওয়ার টিলার কিনছিলাম সেটি দিয়ে যা আয় হতো তা দিয়ে আমাদের সংসার চলতো।কিন্তু সেটিও কিছুদিন আগে চোরে নিয়ে গেছে। আমি গতকালকে পান্তাভাত দিয়ে ইফতারি করেছি সেটি দেখে আমার ছেলে প্রতিবেশী বিপ্লবের সাথে মাছ ধরতে গিয়েছিল। ওর বয়স কম ওরে কাজে যেতে দিতে চাইনি।আমাদের কষ্ট দেখে তারপরও ও মাছ ধরতে গিয়েছিলো।
জেলে বিপ্লব হাওলাদার বলেন,সকালে আমরা মাছ ধরতে গিয়েছিলাম এসময় মিতালি -৫ লঞ্চ আমাদের নৌকাতে ধাক্কা দেয়। আমরা লাইট দিয়ে ইশারা দিয়েছি তারপরও আমাদের নৌকার উপর উঠিয়ে দেয়।আমি লাফ দিয়ে পাশে পড়ে যাই। এসময় রায়হান তলিয়ে যায়।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএস