ঈদ সামনে রেখে বাড়ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক

আরিফ হোসেন প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
ঈদ সামনে রেখে বাড়ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক

বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে সড়কে যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়ন্ত্রণহীন ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। এসব যানবাহন কোনো ধরনের নিয়ম না মেনে মহাসড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে।

এর ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ২০ থেকে ২৫টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

বেপরোয়া গতির ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা

বরিশাল মহানগর ও আশপাশের বিভিন্ন সড়কে প্রতিনিয়ত ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ১১ মার্চ গভীর রাতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানগাড়ি উল্টে চালকসহ দুইজন নিহত হন। ২২ জানুয়ারি বিএম কলেজের সামনে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু হয়। ১৮ ডিসেম্বর নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় এক নারী ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ বা লাইসেন্স। তারা যত্রতত্র গাড়ি ঘুরিয়ে যানজট সৃষ্টি করছেন এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন।

সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগের গড়মিল

বরিশাল সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, নগরীতে ৭ হাজার ৬১০টি হলুদ রিকশাকে লাইসেন্স দেওয়া হবে এবং এরপর অবৈধ অটোরিকশা ও ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। কিন্তু বাস্তবে নগরীতে ২০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে, যার কোনো পরিসংখ্যান নেই ট্রাফিক বিভাগের কাছেও।

মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ প্রতিদিন ৫ থেকে ১০টি লাইসেন্সবিহীন ইজিবাইক আটক করলেও কয়েকদিন পর ৩ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে সেগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না।

বিদ্যুৎ অপচয়ও বাড়ছে

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক বা রিকশার ব্যাটারি চার্জে দৈনিক ১৪-১৫ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। এতে বরিশাল নগরীতে বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, "নগরীতে নতুন করে যেন কোনো অবৈধ রিকশা তৈরি না হয়, সে বিষয়ে আমাদের নজর রয়েছে।"

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, "লাইসেন্স কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর অবৈধ অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া, এসব যানবাহনের উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।

ইএইচ