কোটা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর দুই নাম্বার গেইট ও ষোলশহর রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের ফলে কিছু সময়ের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সম্প্রতি হাইকোর্ট ভোকেশনাল এবং পলিটেকনিক থেকে পাশ করা প্রকৌশলীদের একই গ্রেডে অন্তর্ভুক্তির আদেশ দিয়েছেন, যা তারা যৌক্তিক মনে করছেন না।
শিক্ষার্থীরা জানান, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করা প্রয়োজন।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, চার বছর ধরে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে তারা দশম গ্রেডে চাকরি পাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, অথচ এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করে ভোকেশনাল শিক্ষার্থীরা একই গ্রেডে চাকরি পেতে যাচ্ছেন, যা তারা মনে করেন অযৌক্তিক। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দেন যে, যদি তাদের দাবি পূরণ না হয়, তারা বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবেন, যার মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, "যাদের দায়িত্ব ছিল ল্যাবের তালা খোলা আর বন্ধ করা, তারা এখন স্যার হবে। একজন নার্স যেমন ডাক্তার হতে পারে না, তেমনি একজন অষ্টম শ্রেণি পাস ছাত্র ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হতে পারে না। চব্বিশের আন্দোলনের পরেও কিভাবে ৩০ শতাংশ কোটা থাকে? যদি এই কোটা বাতিল না হয়, আমরা আবারও দেখিয়ে দিবো কিভাবে বাতিল করতে হয়।"
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, "চব্বিশের আন্দোলন হয়েছিল কোটা এবং মেধা নিয়ে। সেই আন্দোলন সফল হওয়ার পর কেন আজ আবার কোটা আসবে? ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ১০ম গ্রেড আমাদের অধিকার, তাহলে কেন ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা দিয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে?"
এদিকে, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে মুরাদপুর-বহদ্দারহাটমুখী সড়ক এবং বহদ্দারহাট-মুরাদপুর থেকে জিইসিমুখী সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে কর্মজীবী ও দূর-দূরান্তের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। যানজট ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতেও। রোজাদারদের অনেককেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশও।
উল্লেখ্য, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে মূলত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ দেয়া হয়। এই পদে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তি বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষাদান করেন। সম্প্রতি হাইকোর্টের এক রায়ের মাধ্যমে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি দিয়ে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে নিয়ে আসা হচ্ছে, যা নিয়ে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে।
ইএইচ