দেবীগঞ্জে এনসিপি‍‍’র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম

দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
দেবীগঞ্জে এনসিপি‍‍’র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম

সাধারণ মানুষের কাছে লুটপাট করবে তাদেরকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আর বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না। আপনারা একটা জিনিস মনে রাখবেন পাঁচ বছর একদিন যদি আপনি তার কাছে কিছু নেন বাকি পাঁচ বছর সে আপনার রক্ত চুষে খাবে। এই সুযোগ কোন মেম্বার, চেয়ারম্যান, মেয়র, এমপি, মন্ত্রী কাউকে আর দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম।

সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বিজয় চত্বরে সংক্ষিপ্ত পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য ওয়াশিস আলমের সঞ্চালনায় সারজিস আলম বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি ২০২৪ সালের গনঅভ্যুত্থানের পরে তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করেছে।

এখানে আমি উত্তরাঞ্চলের ৩২ টি জেলার মুখ্য সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি। আপনাদের পঞ্চগড়ের ছেলে হিসেবে এ দায়িত্ব পালন কালে আমি আমার জায়গা থেকে আপনাদের কাছে সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই বাংলাদেশের বিগত বছরে আমরা অনেক ধরনের সরকার দেখেছি। অনেক ধরনের সরকার প্রধান দেখেছি কিন্তু বিগত ১৬ বছরে খুনি শেখ হাসিনা স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে উঠতে শেষ পর্যন্ত দেড় থেকে দুই হাজার প্রাণ কেড়ে নিয়ে ছাত্র জনতার অদ্ভুতথানে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এরপর তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক দল এসেছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলা উপজেলায় কাজ শুরু করেছি।

তিনি বলেন, আমরা খুব শিগগিরই আপনাদের দ্বারে দ্বারে যাব, এতদিন ধরে বাংলাদেশে যে বিভিন্ন সিস্টেমগুলো দেখেছি বিভিন্ন অন্যায়, অত্যাচার  জুলুম, মিথ্যা মামলা, হয়রানি, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, এগুলো দেখেছি আমরা এগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের জায়গা থেকে সবসময় প্রতিবাদ জানিয়ে রাখবো এবং যেখানে এগুলো দেখবো। সেখানে এগুলোকে আমরা প্রতিহত করবো আমরা তখনই। শুধু আমাদেরকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে চাই আমরা কেমন লোক। আমরা কাজ করে দেখাতে চাই এবং সেই কাজের সুযোগটি আমরা আপনাদের কাছে চাই। আমরা খুব শীঘ্রই আপনাদের দ্বারে দ্বারে আমাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি পক্ষ থেকে পৌঁছে যাব। আমরা বিশ্বাস করি আগামী বাংলাদেশে যে নতুন বাংলাদেশ আছে। এখানে দলের নাম দেখে কিংবা কোন মার্কা দেখে কেউ আর ভোট দিবেন না। কোন লোকটা কেমন, কে কেমন কাজ করছে, কার কথার সাথে কাজে মিল কেমন, এই জিনিস গুলো দেখে আগামী বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন মার্কায় ভোট দিবে।

তিনি আরও বলেন, এতদিন ধরে এই গণমানুষকে নেতারা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছে। তারা শুধু ভোটের আগের দিন, ভোট চাইতে যায় আর হাতে কিছু টাকা ধরে দেয়। আর ভোটটা শেষ হওয়ার পরে, তারপরে একটা পিয়ন পদ, একটা ভিজিপি কার্ড, একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড আর যেই কাজেই তাদের কাছে যান না কেন কাজ হওয়ার আগেই তারা টাকার জন্য হাত পেতে বসে থাকে। এই নতুন বাংলাদেশে এগুলো আর হতে দেওয়া যাবে না। আমরা আপনাদের সন্তানের মত অনেকের ভাইয়ের মতো অনেকের নাতির মত। আমরা একটা কথা আপনাদেরকে বলি আমরা ভুল করলে আপনারা আমাদেরকে শুধরে দিবেন। আমরা আপনাদের কাছ থেকে ভুল শুধরে নেওয়ার জন্য সব সময় প্রস্তুত কিন্তু আপনারা এতটুকু নিশ্চিত করবেন। আমরা এখন থেকে আর কোন দলের কোন মার্কার অন্ধ ভক্ত হবো না। যদি আপনি অন্ধ ভক্ত হন তাহলে আপনার মূল্য আর কেউ দিবে না। মনে করবে কিছু দিলে আছে না দিলেও আছে। এর দরকারটা কি এর কথা শোনার। ঐদিন এখন আর নাই যদি ঐ দিন থাকতো তাহলে এত বড় আন্দোলনের মুখে হাসিনা দেশ ছাড়তো না।

তিনি বলেন, আপনারা মনে রাখবেন আপনার সন্তানেরা এখন তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। আপনাদের সন্তানরা এখন তাদের জায়গা থেকে যেগুলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সব সময় প্রস্তুত। আপনাদের সাথে আমার এই দেবীগঞ্জে যে লোকেরা আছে তোমার সাথে ভবিষ্যতে আরো দেখা হবে। যদি আপনাদের কথা রাখতে পারি তাহলে আপনারা ভোট দিবেন। রাখতে না পারলে ভোট দিবেন না। যদি কাজ করতে পারি তোমার কথা শুনি ভোট ছাড়া তোমার সামনে যাই তাহলে ভোট দিবেন। এবং সবশেষ আপনাদের একটি কথা বলি এই পঞ্চগড় আমার জন্মভূমি। তোমার প্রতি আমার আলাদা দাবি আছে। কারণ মুই তো তোমারে ছাওয়া এজন্যে সামনে তোমার বাড়ি যেকোনো সময় পাটা শাক হোক আর আলুর ভর্তা হোক খাবার যামো। পঞ্চগড় দেবীগঞ্জ কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায় এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা একসঙ্গে গল্প করবো।

সারজিস আলম ঢাকা থেকে সৈয়দপুর আসার পরে পঞ্চগড়ের ৫ উপজেলার শতাধিক মাইক্রোবাসের গাড়ি বহর নিয়ে তাকে দেবীগঞ্জে নিয়ে আসেন। পথ সভায় কয়েক শতাধিক কর্মী সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।


বিআরইউ