ফুটবল খেলা নিয়ে দ্বন্দ্ব, প্রবাসীর ভাইকে হত্যার চেষ্টা

এম এইচ শুভ, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
ফুটবল খেলা নিয়ে দ্বন্দ্ব, প্রবাসীর ভাইকে হত্যার চেষ্টা

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি, ঈদের সেই আনন্দ সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে এলাকার কিশোররা ঈদের পরদিন একটি ফুটবল খেলার আয়োজন করে। কে জানতো ঈদের আনন্দে আয়োজন করা খেলা নিয়েই বিপদ নেমে আসবে দুটি গ্রামে।

ফুটবল খেলা নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জের ধরে দুইটি গ্রামে সহিংসতা সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার মধ্যে এক সৌদি আরব প্রবাসীর ভাইকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

গণপিটুনির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি ঘটে ৩ এপ্রিল রবিবার, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের কৈজুরী গ্রামে।

গণপিটুনির শিকার বশিরুল ইসলাম (২৮) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ সময় বশিরুল ইসলামের বাবা আবদুর রহিম (৬০) ও চাচা আবদুল লতিফ (৬৩) আহত হন।

আহতরা সবাই কৈজুরী গ্রামের বাসিন্দা। উভয়পক্ষ থেকেই থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা এরশাদ মিয়া জানান, ঈদের পরের দিন কৈজুরী গ্রামের কিশোররা গ্রামের মাঠে একটি ফুটবল খেলার আয়োজন করে। খেলা চলাকালে পাশের সোনাকান্দা গ্রামের কিছু ছেলে খেলা দেখতে আসে। খেলা চলাকালে একটি কর্নার কিক থেকে গোল হয়। রেফারি গোলটি সঠিক বলে ঘোষণা করলেও সোনাকান্দা গ্রামের ছেলেরা গোল হয়নি বলে চিৎকার শুরু করে। এসময় স্থানীয় হাবিব মিয়া বহিরাগত ছেলেদের বাধা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিব মিয়াকে মারধর করতে আসে। এরপর দুই গ্রামের ছেলেদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। এই ঘটনার জের ধরে সোনাকান্দা গ্রামের লোকজন মিটিং করে কৈজুরী গ্রামের লোকজনকে দেখে নিবে বলে ফেসবুকে হামলার ঘোষণা দেয়। ঘোষণা দেওয়ার দুই দিন পর, ৫ এপ্রিল সকালে, কৈজুরী গ্রামের বশিরুল ইসলাম, রহিম মিয়া, লতিফ মিয়া সহ কয়েকজন রামচন্দ্রপুর বাজারে যাওয়ার পথে সোনাকান্দা গ্রামে প্রবেশ করলে সোনাকান্দা গ্রামের সিয়াম, জুলহাস, আল-আমিন, তামিমসহ ১০-১২ জন মিলে তাদের উপর হামলা করে। এই সময় বশিরুল ইসলামকে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দিলে তাকে পানি থেকে তুলে আবারও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে বশিরুল অজ্ঞান হয়ে যান। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে।

সোনাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ফুটবল খেলা নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছে, তা সমাধান করার আগেই কৈজুরী গ্রামের লোকজনকে গ্রামে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল, তবে তারা নিষেধ অমান্য করে গ্রামের উপর দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মারামারি শুরু হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন বলেন, বশিরুল ইসলামকে গণপিটুনির ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের আটক করতে অভিযান চলছে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

ইএইচ