প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দড়িচর খাজুরিয়া ও জয়নগর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ গজারিয়া নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। কিন্তু ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এবার বর্ষা শুরুর আগেই খরা মৌসুমে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদী গিলে খাচ্ছে মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি, বাঁশঝাড়, বাগান, কবরস্থান, রাস্তা-ঘাট, স্কুল, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন পাকা-আধাপাকা স্থাপনা। ইতোমধ্যে ধারাবাহিক ভাঙনে দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা গজারিয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
শনিবার বিকেল ৪টায় ভাঙনরোধে কার্যকর উদ্যোগের দাবিতে দুটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা গজারিয়া নদীর তীরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মানববন্ধনে বক্তারা সরকারকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, এই সময়ের মধ্যে ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে গজারিয়া নদীতে সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে দক্ষিণাঞ্চলকে অচল করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- জয়নগর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম, জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন নান্নু সিকদার, জিয়াউল হক হাসান, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, খরা মৌসুমেই যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, তা বর্ষায় আরও ভয়াবহ রূপ নেবে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে মানচিত্র থেকেই দুটি ইউনিয়ন হারিয়ে যাবে। কয়েক দিনের অব্যাহত ভাঙনে শত শত একর ফসলি জমি, অর্ধশতাধিক বসতভিটা, হাট-বাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে একাধিক মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ হাজারো বসতভিটা ও জমি।
এদিকে ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে কিছু প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তারা। সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইএইচ