প্রশস্ত হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রধান সড়ক

অনেক দুর্ঘটনা, শত শত প্রাণহানি এবং দীর্ঘ আন্দোলনের পর অবশেষে প্রশস্ত হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রধান সড়ক।

‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক’ নামে পরিচিত এ সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। এটি দেশের অন্যতম ব্যস্ততম মহাসড়ক।

বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার পর্যন্ত ১৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটির অধিকাংশ অংশের প্রশস্ততা মাত্র ১৮ থেকে ৩৪ ফুট।

অপ্রশস্ত সড়ক, অতিরিক্ত বাঁক, ছোট গাড়ির ভিড়, লবণবাহী গাড়ির কারণে সৃষ্ট পিচ্ছিলতা, এবং পার্শ্বরোড থেকে মূল সড়কে ওঠা ছোট গাড়ির বিড়ম্বনা—এসব মিলিয়ে এ সড়কে নিয়মিতভাবে দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে যানজটও স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দূরপাল্লার গাড়িগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না, গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা।

এবারের ঈদুল ফিতরের প্রথম তিন দিনে কেবল লোহাগাড়া অংশেই তিনটি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন। বিভিন্ন সময় অন্যান্য এলাকায়ও অসংখ্য দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন শত শত যাত্রী।

দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী এ সড়ক প্রশস্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এবারের ঈদের দুর্ঘটনাগুলোর পর তীব্র গণআন্দোলন গড়ে ওঠে।

বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন মানববন্ধন, মিছিল, সমাবেশ, গণস্বাক্ষর, স্মারকলিপি, প্রতীকী কফিন মিছিল ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। সরকারের উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী জানান, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে ১৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রশস্তকরণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এ কাজ শেষ হলে প্রকল্প প্রস্তুত করে দরপত্র আহ্বান করা হবে। তার মতে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে চার লেনের সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হতে পারে।

এছাড়াও একই সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কও প্রশস্তকরণ করা হবে বলে জানা গেছে।

ইএইচ