লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ধান, গম ও ভুট্টার পাশাপাশি এখন কৃষকেরা মসলা ও ওষুধি জাতীয় ফসল তেজপাতা চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় তেজপাতা চাষে তিনগুণ লাভ হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে বাড়ছে আগ্রহ। এই ফসল একবার রোপণ করলে পরবর্তীতে আর তেমন খরচ করতে হয় না। ব্যবসায়ীরা সরাসরি মাঠ থেকেই পাতা কিনে নিয়ে যান।
তেজপাতা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের কৃষক তবিবর রহমান। তিনি নিজের তিন একর জমিতে তেজপাতার বাগান গড়ে তুলেছেন। সাথী ফসল হিসেবে একই জমিতে চা গাছও লাগিয়েছেন, যা জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করছে।
৬৫ বছর বয়সী কৃষক তবিবর রহমান জানান, “তিন একর জমিতে তেজপাতার গাছ লাগিয়েছি। প্রথমবার কিছুটা খরচ হয়, কিন্তু এরপর থেকেই আয় আসতে শুরু করে। যত সময় যায়, আয় ততই বাড়ে।”
একই গ্রামের কৃষক আওলাদ হোসেন (৩৫) ও চাঁন মিয়া (৬৫) বলেন, “তেজপাতা চাষে অন্যান্য ফসলের তুলনায় প্রায় তিনগুণ লাভ হয়। ভালোভাবে পরিচর্যা করলে এক বিঘা জমির তেজপাতা বিক্রি করে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়।”
তেজপাতা রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পাশাপাশি এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধি উপাদান হিসেবেও পরিচিত। দেশে ব্যাপক ব্যবহার ছাড়াও এটি বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল গাফ্ফার বলেন, “তেজপাতা একটি ওষুধি গুণসম্পন্ন মসলা জাতীয় ফসল। চাষে খরচ কম, তাই এক বিঘা জমি থেকে বছরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় সম্ভব। ফলে কৃষকেরা তেজপাতা আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।”
তিনি আরও জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের তেজপাতাসহ বিভিন্ন মসলা জাতীয় ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং মাঠপর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
ইএইচ