বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের কর্ণকাঠী গ্রামে এক দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বামী রাহাত হাওলাদারের ঝুলন্ত মৃতদেহ এবং স্ত্রী মোসাম্মৎ লামিয়ার বিছানায় পড়ে থাকা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। নিহতদের পরিবার দাবি করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
সোমবার সকালে সদর উপজেলার ৭ নম্বর চরকাউয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কর্ণকাঠী গ্রামের হাওলাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাহাত হাওলাদার ওই এলাকার স্বপন হাওলাদারের ছেলে এবং তার স্ত্রী লামিয়া চাঁদপুরা ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের হানিফ হাওলাদারের মেয়ে।
স্থানীয় এক ইমাম জানান, সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় রাহাতের বাবা ছেলেকে ডাকাডাকি করেন। সাড়া না পেয়ে বড় ভাই মহিউদ্দীনকে ডেকে আনেন এবং স্থানীয়দের সহায়তায় রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন রাহাতকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং লামিয়াকে বিছানায় নিথর দেহে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে রাহাত ও লামিয়ার বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। রাহাত বিয়ের পর জানতে পারেন, লামিয়ার বিয়ের আগে এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরপর থেকে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। একাধিকবার লামিয়া বাবার বাড়ি চলে যান এবং ফিরে আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে পারিবারিকভাবে সমঝোতার মাধ্যমে তিনি আবার শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসেন।
এলাকাবাসীর ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে রাতে ঝগড়ার পর রাহাত প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করে পরে নিজে আত্মহত্যা করেছেন। তবে প্রকৃত ঘটনা তদন্তের পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দম্পতির মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল এবং প্রায়ই ঝগড়া হতো। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রীকে হত্যার পর রাহাত আত্মহত্যা করেছেন। তবে এটি আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা—তা এখনই নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হবে।”
ইএইচ