সন্তান বিক্রি করে মোবাইল-গহনা কিনলেন মা

আ. হামিদ, মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৫, ০২:২৯ পিএম
সন্তান বিক্রি করে মোবাইল-গহনা কিনলেন মা

টাঙ্গাইলের মধুপুরে মোবাইল ফোন কিনতে নিজের চার মাস বয়সী শিশু পুত্রকে বিক্রি করে দেন এক গর্ভধারিণী মা। ঘটনাটি মধুপুর পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকায় ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে লাবনী আক্তার লিজা নামের ওই নারী তার শিশু সন্তান তামিমকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এরপর ওই টাকা দিয়ে তিনি মোবাইল ফোন, নাকের নথ, নূপুর ও জুতা কেনেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাবনীর স্বামী রবিউল ইসলাম বিষয়টি মধুপুর থানা পুলিশকে জানান। এরপর পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়।

শিশুটির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মধুপুর পৌর শহরের পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে গোপালপুর উপজেলার বলাটা গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তারের দুই বছর আগে বিয়ে হয়। ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয় এবং পরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে নানা টানাপোড়েন শুরু হয়। এর মধ্যেই চার মাস আগে তাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়।

রবিউল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, “ছেলে তামিমের জন্মের পর থেকেই লাবনীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। কিছুদিন আগে সে ছেলেকে নিয়ে তার বোনের বাড়ি ভূঞাপুরে যায়। পরে তাকে বাড়িতে ফিরতে বললে সে অস্বীকৃতি জানায় এবং দুর্ব্যবহার করে। পরে জানতে পারি, সে আমার ছেলেকে বিক্রি করেছে।” 
তিনি আরও বলেন, “কৌশলে তাকে ভূঞাপুর থেকে পাকুটিয়ায় ডেকে এনে বাড়ি নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে, সিরাজগঞ্জের এক ব্যক্তির কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করেছে।”

শিশুটির মা লাবনী আক্তার লিজা বলেন, “আমার মাথা ঠিক ছিল না। মনির নামের একজনের সহযোগিতায় গত ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে আমার ছেলে তামিমকে বিক্রি করি। পরে ওই টাকা দিয়ে মোবাইল, নাকের নথ ও নূপুর কিনেছি। এখন বুঝতে পারছি, এটি আমার বড় ভুল হয়েছে। আমি অনুতপ্ত।”

মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমরানুল কবীর আমার সংবাদকে বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করি। ওসি তদন্ত রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল সিরাজগঞ্জে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং শুক্রবার সকালে শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।”

ইএইচ