স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সংকটে এক মাসের শিশুর মৃত্যু

ইব্রাহীম, বাঘাইছড়ি প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সংকটে এক মাসের শিশুর মৃত্যু

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সংকটে রিমলি চাকমা নামের এক মাস বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা রিটন চাকমা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অভিযোগ, হাসপাতালে কোনো অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি।

পরে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) পদ্ধতি প্রয়োগ করে শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি।

এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক অনুপম চাকমা জানান, "গাড়ির চাকা ও ব্যাটারি নষ্ট হয়ে পড়েছে, তাই রোগী পরিবহনে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। আরএমও স্যার নেই, ফলে মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যক্তিগত টাকা থাকলে নিজেই কিনে ফেলতাম। রোগীদের কষ্ট দেখে খুব খারাপ লাগে।"

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, সেটিও বর্তমানে অচল। যেখানে ১৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা, সেখানে মাত্র ৪ জন আছেন, তারাও নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।"

এ বিষয়ে রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেন, "বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন মেডিকেল অফিসার পদায়ন করা হয়েছে, কিন্তু তিনি এখনও যোগদান করেননি। হাসপাতালে কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বারবার বলার পরেও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) এখনো দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। দীর্ঘদিনের চাকরি, পেছনে প্রভাবশালী শক্তি থাকায় তারা দায়িত্বের প্রতি উদাসীন। চাকরি হারানোর ভয়ও নেই বলে এমন আচরণ করছেন।"

হাসপাতালের অবকাঠামোগত অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। বারবার মেরামত করেও কোনো উন্নয়ন ঘটছে না। জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়েই চালানো হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম। নেই নিরাপদ পানির ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ না থাকলে জেনারেটরেরও কোনো বিকল্প নেই।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত একটি নতুন হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করে আধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

তাদের মতে, এটি শুধু বাঘাইছড়িবাসীর অধিকার নয়, একটি মৌলিক মানবিক প্রয়োজন।

ইএইচ