শরীয়তপুরে ১৪৪ ধারা জারি

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৫, ০১:০৯ পিএম
শরীয়তপুরে ১৪৪ ধারা জারি

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এক পক্ষ পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধের কাছ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছে, অপর পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত।

নড়িয়ায় পদ্মা নদীতে ৬ এপ্রিল থেকে প্রায় ৩০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। নদীর তলদেশ থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার ফলে তীর রক্ষা বাঁধ ও আশপাশের ফসলি জমি ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

‘নড়িয়ার সর্বস্তরের জনতা’ ব্যানারে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে শনিবার দিনব্যাপী মাইকিং করে রোববার বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ও মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এস এম ফয়সাল এবং কলাবাগান থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা জামান।

অপরদিকে, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ রয়েল ও তাঁর অনুসারীরা পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে শনিবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে তিনি বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ‘বৈধভাবে নিলামে কেনা বালু উত্তোলন বন্ধে ষড়যন্ত্র চলছে’ এবং অপর পক্ষকে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন চর এলাকায় স্তূপকৃত ১০ কোটি ঘনফুট বালু নিলামে বিক্রি করে। এর মধ্যে ৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা দিয়ে বালুটি কিনেছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ। কার্যাদেশ পাওয়ার পর তাঁর লোকজন পদ্মা নদীর চর আত্রা ও চর নড়িয়া এলাকায় ৩০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেন, যা অনেকাংশেই নির্ধারিত এলাকার বাইরে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে রোববার সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নড়িয়া উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যে স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছি, সেই জায়গার বাইরে থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদারকে সতর্ক করা হয়েছে। তারা নিয়ম না মানলে নিলাম বাতিল করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বালু উত্তোলন এখন রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় সংঘাত এড়াতে সকল সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন মাঝি বলেন, ‘নড়িয়ার মানুষ নদীভাঙনের আতঙ্কে আছে। তাই আমরা চাই, অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হোক। জনগণের স্বার্থে আমাদের এই অবস্থান।’

এ বিষয়ে ফরিদ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন রিসিভ হয়নি।

ইএইচ