নিকলীর হাওরজুড়ে দিগন্তজোড়া সোনালি ধান পেকে আছে। কিন্তু সেই ধান কাটার লোক নেই। ধান ঘরে তুলতে না পেরে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষক। শ্রমিক সংকটে থমকে আছে ফসল তোলার মৌসুম।
প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌসুমি শ্রমিক আসার কথা থাকলেও এ বছর এখনো তারা আসেনি। ফলে স্থানীয় হাটগুলোতে শ্রমিকের দেখা মিলছে না। অধিক মজুরি দিতেও মিলছে না শ্রমিক।
নিকলী উপজেলার বটতলা কৃষি শ্রমিক হাটে ভোর থেকে অপেক্ষা করছেন কৃষকরা। কেউ কেউ আশপাশের উপজেলা থেকেও শ্রমিক খুঁজে ফিরছেন। এক সপ্তাহ আগেও যেখানে একজন শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫০০–৬৫০ টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০–৯০০ টাকায়। তবু মিলছে না শ্রমিক।
নিকলী সদর ইউনিয়নের কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, ‘পাঁচ একর জমির ধান কাটতে ৫০ জন শ্রমিক লাগছে। তাদের মজুরি দিতে হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। ধান বিক্রি করেছি মণপ্রতি ৯০০ টাকায়। লাভ তো দূরের কথা, পুঁজি তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
শ্রমিক না পেয়ে অনেক কৃষক এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ ঘুরছেন ধান কাটার যন্ত্রের খোঁজে, তবে পর্যাপ্ত যন্ত্রও নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, এ বছর নিকলীতে ৩৫ হাজার ৯৫০ একর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। প্রতি একরে ফলন হয়েছে গড়ে ৬০–৭০ মণ। হাওরের প্রায় ১০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ৫০টি হারভেস্টার দিয়ে কাজ চললেও চাহিদা অনুযায়ী সংখ্যাটি খুবই কম। অন্তত ১২৫টি হারভেস্টার থাকলে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা যেত।
শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকের মুখে এবার হাসি নেই। দুর্যোগ আসার আগে ধান ঘরে তুলতে পারবে কি না, সেই ভাবনাতেই দিন কাটছে হাওরপারের মানুষের।
বিআরইউ