ময়মনসিংহে টিসিবি গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ১১:৪২ পিএম
ময়মনসিংহে টিসিবি গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

ময়মনসিংহে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর আঞ্চলিক কার্যালয়ের গুদাম কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় ডিলাররা। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ডিলারদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, মালামাল আটকে রাখা এবং ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) জটিলতা তৈরির মাধ্যমে হয়রানি করছেন।

সম্প্রতি জেলার একাধিক ডিলার এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুন মাসে যোগদানের পর থেকেই গুদাম কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন। তিনি ডিলারদের মাল ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা, গাড়িচালকদের ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখা এবং অসদাচরণের মাধ্যমে পরিবেশ উত্তপ্ত করে তুলছেন।

বিশেষ করে মেসার্স আকিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সাহিল আহমেদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এরপর আঞ্চলিক কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠকে তিনি এমন ঘটনা আর ঘটাবেন না বলে আশ্বাস দিলেও অভিযোগ রয়েছে, তিনি কথা রাখেননি।

ময়মনসিংহ সদরের ডিলার মিনহাজ উদ্দিন জানান, "গুদাম কর্মকর্তা সামান্য বিষয়েই ডিলারদের গালাগাল করেন। অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মাল আনতে আসেন, অথচ আমাদের সঙ্গে অসহ্য আচরণ করা হয়। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে এর প্রতিকার চেয়েছি।"

হালুয়াঘাটের তামান্না এন্টারপ্রাইজের মালিক মোস্তফা কামাল অভিযোগ করেন, "প্রতিটি ট্রাক চালকের কাছ থেকে ৫০ টাকা এবং মাল লোডের সময় ২০০ টাকা করে আদায় করা হয়। তার সহকারী খায়রুল এসব কাজের দায়িত্বে থাকে। এভাবে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।"

নারী ডিলারদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগও উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নারী ডিলার জানান, গুদাম কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন, অযথা ডিও আটকে রাখেন এবং রাতের বেলায় ফোন দেন।

সানকিপাড়ার জান্নাত বীজ ভান্ডারের মালিক পিংকি বলেন, “আমি তার অফিসে গেলে তিনি আমার সঙ্গে অত্যন্ত মানহানিকর মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে আমি মামলা করতে চেয়েছিলাম, পরে অফিস প্রধান তাকে ডেকে শাসিয়েছেন। কিন্তু তার আচরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি।”

টিসিবি ময়মনসিংহের অফিস প্রধান জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগেও একাধিকবার অভিযোগ এসেছে। এবার তাকে শেষবারের মতো সতর্ক করব। এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুণ্ন হবে।”

তবে অভিযোগের বিষয়ে মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম জানান, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তাকে সতর্ক করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ইএইচ