আজমিরীগঞ্জে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত শতাধিক, লুটপাট-ভাঙচুর

আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম
আজমিরীগঞ্জে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত শতাধিক, লুটপাট-ভাঙচুর

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নোয়াগড় গ্রামে পঞ্চায়েত সমিতির টাকার হিসাব নিয়ে বিরোধের জেরে শাজাহান মেম্বার ও আক্তার হোসেনের অনুসারীদের মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের মধ্যে দোকান লুটপাট ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার সকালে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড় গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর আহত ১১ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে শাজাহান মেম্বারের পক্ষের মুজাহিদ মিয়া ও মদরিছ মিয়ার মধ্যে পারিবারিক ঝগড়ার সময় আক্তার হোসেনের পক্ষের লতিফুর মেম্বারের ছেলে রাকিব বিষয়টি মীমাংসা করতে গিয়ে আহত হন। পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পথে তাকে আবারও মারধর করা হয়।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির আওতায় থাকা জমি, পুকুর, ডোবা, কাল ও বিল ইজারা দিয়ে প্রাপ্ত অর্থের হিসাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। লতিফুর মেম্বারকে মহল্লার সর্দার নিযুক্ত করা হলেও তিনি টাকার হিসাব দিতে গড়িমসি করছিলেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, প্রজেক্ট বাবদ প্রতি সদস্যের কাছ থেকে ৩৭০ টাকার বেশি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও লতিফুর মেম্বার অতিরিক্ত ৫০০ টাকা আদায় করেন, এতে শাজাহান মেম্বারের পক্ষ প্রতিবাদ জানায়।

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শাজাহান মেম্বারের পক্ষ একটি ট্রলিতে ধান নিয়ে যাওয়ার সময় আক্তার পক্ষের রাব্বি ও আরও কয়েকজন ধান আটকে দেয়। এর জের ধরেই সংঘর্ষ শুরু হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন—সাদ্দাম মিয়া (৩৫), তকছির মিয়া (২৮), ওয়াহিদুল (২৫), রসিদ (২৮), সাব্বির (১৮), ওয়াসিম (২৯), ধনু (৬০), কোহিনুর (২৫), সাগর (৫০), আবু সহিদ (৩৫), আজিম উদ্দিন (২৮), সেনাবুর (৩৮), সরাজ (৫৫), সেলু (৪৫), আজিজুল (৫২), জাহাঙ্গীর (৪৮)সহ অনেকেই।

আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএম মাঈদুল হাসান জানান, “সমিতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই মারামারির ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের আহতরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

ইএইচ