‘বয়স কেবল একটি সংখ্যা’—এই বাক্যটির জীবন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছেন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার সাংবাদিক কায়সার হামিদ (৫১) ও তাঁর স্ত্রী মোছা. রোকেয়া আক্তার রিনা (৪৮)। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাঁরা হাতে তুলে নিয়েছেন বই-খাতা। বর্তমানে দু’জনেই ২০২৫ সালের দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
দম্পতির শিক্ষাজীবনের এই নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা থেকে। পরীক্ষার কেন্দ্র কুলিয়ারচরের লক্ষিপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ। দু’জনই একই কেন্দ্রের ৩ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন।
মাদ্রাসার কম্পিউটার ল্যাব সহকারী আলতাফ হোসেন মানিক বলেন, ‘এই দম্পতির অধ্যবসায় আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা তাঁদের মঙ্গল কামনা করি।’
কেন্দ্র সচিব ও কলেজটির অধ্যক্ষ সেলিম হায়দার বলেন, ‘এই বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়াটা খুব বিরল ও অনুপ্রেরণামূলক। তাঁদের দেখে অনেকেই নতুন করে পড়াশোনার সাহস পাবেন।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কায়সার হামিদ সরাসরি ক্যামেরার সামনে আসতে চাননি। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, এ বয়সে এসে পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরে তিনি ভীষণ আনন্দিত।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কয়েকজন সহপাঠী জানান, “শিক্ষা কখনো থেমে থাকে না। বয়স বাধা নয়, মনোবলই আসল। কায়সার দম্পতি সেটাই প্রমাণ করছেন।”
পড়ালেখার মাঝপথে থেমে যাওয়া এই দম্পতির জীবনে এসএসসি পরীক্ষা যেন দ্বিতীয় সূচনা। তাঁদের এই যাত্রা শুধু তাঁদের নিজেদের জন্যই নয়, বরং সমাজের বহু মানুষকে নতুন করে ভাবতে শেখাবে—‘শিখতে কোনো বয়স লাগে না।’
বিআরইউ