গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স মধুমতি সার্ভিস সেলের সিনিয়র শাখা ব্যবস্থাপক (জিএম) সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে বীমা গ্রাহকদের কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রায় ২০ জন গ্রাহকের বীমা পলিসির টাকা কোম্পানিতে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন সাইদুর রহমান। টাকা ফেরত চাইলে নানা তালবাহানা ও হুমকি-ধামকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মিরাজ শেখ বলেন, ২০২১ সালে বার্ষিক ৫১ হাজার ৬৫০ টাকা প্রিমিয়ামে একটি পলিসি করি সাইদুর রহমানের মাধ্যমে। চার বছরে মাত্র এক বছরের রসিদ পেয়েছি, বাকি তিন বছরের ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ টাকার কোনো রসিদ দিইনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমার টাকা কোম্পানিতে জমা হয়নি। টাকা ফেরত চাইলে সাইদুর তার সহযোগীদের মাধ্যমে আমাকে হয়রানি ও হুমকি দেয়।
গওহরডাঙ্গা গ্রামের আসলাম খান বলেন, “আমার পলিসির বার্ষিক প্রিমিয়াম ৫০ হাজার ১৫০ টাকা। প্রথম বছরের টাকা জমা দিলেও কোনো রসিদ পাইনি। পরে জানতে পারি আমার টাকা কোম্পানির হিসাবে জমা হয়নি।”
পেনাখালী গ্রামের মানিক হাওলাদার ও মুর্শিদা বেগমও জানান, তারা দু’জনে মোট ৪৮ হাজার ৫৩৯ টাকা জমা দিলেও কোনো রসিদ পাননি। অফিসে বারবার গিয়েও কোনো সুরাহা মেলেনি।
গ্রাহক আইরিন আক্তার, শাহিনুর বেগম, জাহানারা বেগম, মমিনুজ্জামান, সুমি খানমসহ অনেকে জানান, তারা পলিসির টাকা জমা দেওয়ার পর রসিদ পাননি এবং পরে জানতে পারেন টাকা অফিসের মূল হিসাবে জমা হয়নি। বর্তমানে টাকা ফেরত চাইলে নানা রকম হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। গ্রাহকেরা তাদের কষ্টের সঞ্চিত টাকা ফেরতের জন্য কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স মধুমতি সার্ভিস সেলের সিনিয়র শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, “গ্রাহকেরা ইউএনও অফিসে অভিযোগ করেছেন। ইউএনও স্যার আমাকে ডাকলে আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।” তবে অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, “টুঙ্গিপাড়া থেকে একাধিক গ্রাহক সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বেশ কয়েকটি পলিসির টাকা কোম্পানির হিসাবে জমা না হওয়ার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ইএইচ