বিশেষ ছাড়ে মোবাইল ব্যাংকিং করতে চায় ‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’

রেদওয়ানুল হক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২৩, ০৯:২৯ পিএম
বিশেষ ছাড়ে মোবাইল ব্যাংকিং করতে চায় ‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’

শর্ত সাপেক্ষে লাইসেন্স প্রাপ্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি (প্রস্তাবিত) মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবসা করতে আইনগত বিশেষ ছাড় চেয়ে আবেদন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। অনুমোদন পেলে ডাক বিভাগের সাথে চুক্তিভিত্তিক পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’ নিজেরাই পরিচালনা করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৪২৬তম সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের প্রথম বোর্ড সভায় বিষয়টি সরকারের কছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক আমার সংবাদকে বলেন, ‘যেহেতু আইনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমএফএস ব্যবসার সুযোগ নেই তাই লিজিং কোম্পানিটি শর্ত শিথিলের জন্য আবেদন করেছে। বিষয়টি বোর্ডে উত্থাপিত হয়েছে। যেহেতু আইনগত ছাড় দেয়ার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেই, তাই সরকারের কাছে বিষয়টি সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে। সরকার পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত জানাবে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আইন অনুযায়ী কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমএফএস ব্যবসা করতে পারে না। কিন্তু নগদ প্রথমত লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসায় নেমে পরে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তির ফলে লাইসেন্সের জন্য আদেন করে। কিন্তু যথাযথ শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় দীর্ঘদিন লাইসেন্স পায়নি এবং নানা বিতর্কের মুখে ডাক বিভাগকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এফএফএস সেবা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। পরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করার আবেদনের প্রেক্ষিতে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি নামে আর্থি প্রতিষ্ঠান গঠনের লাইসেন্স দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী কতিপয় শর্তের প্রেক্ষিতে নিজ নামে এমএফএস সেবা পরিচালনায় অযোগ্য বিবেচিত হয় প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানটি। তাই তারা আইনগত ছাড় পেতে আবেদন করেছে, যা এখন সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টম্যান্টের লাইসেন্স ছাড়াই ডাক বিভাগের ব্র্যান্ড ব্যবহার করে ব্যবসা শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’। স্বল্প সময়ে তারা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানের বাইরে থেকে যায় এমএফএস প্রতিষ্ঠানটি।

ফলস্বরুপ সন্দেহজনক লেনদেন, বিধিবহির্ভুত ব্যাংক লোন ও মুলধনের অতিরিক্ত ই-মানি তৈরীর মতো বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ডাক বিভাগের মালিকানায় নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু বিপুল লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানটির সাথে মালিকানা চুক্তি করতে অপারগতা প্রকাশ করে রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে নগদের ব্যবসা হুমকির সম্মুখীন হয়।

আইন অনুয়ায়ী এমএফএস সেবা পরিচালনার জন্য অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান হলো ব্যাংক। তবে কোন ব্যাংকের সাথে না গিয়ে নিজেরাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে নগদ কর্তৃপক্ষ। নাম প্রস্তাব করা হয় ‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’। শর্ত সাপেক্ষে লাইসেন্স পেলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনে অনুমোদন না থাকায় এমএফএস ব্যবসা করার সুযোগ হারায় প্রতিষ্ঠানটি। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আইনগত ছাড় পেতে আবেদন করে। এখতিয়ার বহির্ভুত হওয়ায় আবেদনটি সরকারের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেএস